প্রশাসন ও বন বিভাগ মুখোমুখি শেরপুরের পরিদর্শনে উপদেষ্টা রিজওয়ানা

ফারুক হোসেন শেরপুর জেলা প্রতিনিধি:পরিবেশ, বন ও জলবায়ু এবং প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, মানুষ ও বন্যহাতির দ্বন্দ্ব নিরসন করতে হলে বনে হাতির আবাসস্থল সম্প্রসারণ করতে হবে। এজন্য বনে আর ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছ লাগানো যাবে না। বনে এসব গাছ লাগানোর ফলে বন্যহাতি পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছে না। মাঝে মধ্যেই লোকালয়ে চলে এসে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করছে। বন বিভাগ এসব গাছ লাগানোর ফলে বন্যহাতির সংঘাতকে আরও তীব্র করেছে। আমরা হাতি আর মানুষ মরার করুণ গল্প আর শুনতে চাই না। সোমবার (২৬ মে) দুপুরে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মধুটিলা ইকোপার্কে বন্যহাতি-মানুষের মাঝে দ্বন্দ্ব নিরসনে বন্যহাতি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে চেক বিতরণ ও ইলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।এসময় তিনি আরও বলেন, বন্যহাতি ও মানুষের দ্বন্দ্বের স্থায়ী সমাধান করতে হলে আমাদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে। আর আমাদের ব্যবহার পরিবর্তন করতে হবে। যদি আমরা তা করতে পারি তাহলে বন বিভাগের অল্প চেষ্টায় আমরা কিছু নিরীহ প্রাণকে বাঁচাতে পারবো। আমরা নিজেরাও বাঁচবো। আজকে বন্যহাতি দ্বারা নিহত দুই পরিবারকে যে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হলো আসলে তা দিয়ে ওই পরিবারের প্রকৃত ক্ষতিপূরণ হবে না। তিনি বলেন, বন্যহাতি খুবই সংবেদনশীল প্রাণী। সে মানুষের কোনো ক্ষতি করতে চায় না। অথচ মানুষ হাতির জায়গা দখল করে ঘরবাড়ি নির্মাণ করেছে। এমনকি চাষাবাদ করছে। এতে তার চলাচলের রাস্তা সংকুচিত হচ্ছে। আমাদেরকে বন্যহাতির চলাচলের রাস্তা সম্প্রসারণ করতে হবে। তাই বনে আর ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছ লাগানো যাবে না। এজন্য বন বিভাগকে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। পরিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষায় বনে বন্যহাতির খাদ্য উপযোগী গাছ লাগাতে হবে। আমরাও চেষ্টা করছি কিভাবে বন্যহাতি ও মানুষ সহাবস্থান করতে পারে। উপদেষ্টা আরও বলেন, সব কিছুতে আমরা রাজনীতি আনবো না। জাতীয় স্বার্থে কিছু কাজ আছে সেগুলো আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে করতে হবে। বন্যহাতির চারণভূমি রক্ষা করতে আমাদের সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। তাই ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও দলীয় স্বার্থ না দেখে আমরা জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষা করবো। একই সাথে বাংলাদেশ যাতে পৃথিবীতে একটি বর্বর মায়াহীন সমাজে পরিণত না হয় সেদিকে আমরা সকলেই খেয়াল রাখবো। দয়া করে আপনারা আমাদেরকে কেউ প্রতিপক্ষ মনে করবেন না। বিগত সরকারের যে ভুল নীতিগুলো ছিল সেগুলো আমরা শোধরানোর চেষ্টা করছি।