কুয়াকাটায় পর্যটক নিগ্রহ, গ্রেফতার ৩

মুন্সী ইউসুফ,কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ‘ব্লু বার্ড’ নামের একটি আবাসিক হোটেলের কক্ষে এক পর্যটককে আটকে রেখে মারধরের অভিযোগ উঠেছে হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পর্যটক তুহিন মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে মহিপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। তিনি ঢাকার মিরপুর এলাকার শেওড়াপাড়া বাসিন্দা আব্দুস সোবহানের ছেলে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন—কুয়াকাটা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি ও হোটেলের ভাড়াটিয়া মালিক মো. বেল্লাল হোসেন (৪৫), তার সহযোগী রিয়াজ (২৪) ও শাকিল (২৪)। মামলার অপর আসামি মো. ইউসুফ হাওলাদার (২৭) পলাতক রয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে হোটেল ব্লু বার্ডের ১০২ নম্বর কক্ষে পর্যটক তুহিনকে আটকে রেখে মারধর করে এবং তার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় হোটেল মালিকপক্ষ। পরে আরও ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে তাকে রুমে তালাবদ্ধ করে রেখে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। পরে তুহিন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করলে মহিপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় চারজনকে আসামি করে মহিপুর থানায় ০২(৫)/২০২৫ নম্বর একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভুক্তভোগী তুহিন জানান, চার দিন আগে তিনি ব্লু বার্ড হোটেলে ১ হাজার টাকায় দৈনিক ভাড়ায় উঠেছিলেন। কিন্তু হোটেল কর্তৃপক্ষ চার দিনের জন্য ১২ হাজার টাকা দাবি করলে তিনি তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর তারা তার কক্ষে গিয়ে মারধর করে এবং তার সঙ্গে থাকা ৪০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এরপর আরও ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে তাকে কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখে। পরবর্তীতে তিনি ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ইউসুফ হাওলাদার পালিয়ে যান। এ বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে, কুয়াকাটা পৌর যুবদলের সভাপতি বেল্লাল হোসেনসহ কয়েকজন শরিক হোটেলটি ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তুহিন নিজেও ওই হোটেলে পতিতা সরবরাহ করতেন। আর লেনদেন সংক্রান্ত জটিলতা থেকেই মূলত এ ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে বলে দাবি করেছেন হোটেল ব্যবসায়ী বেল্লাল হোসেন। মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুল ইসলাম জানান, ৯৯৯-এ কল পেয়ে পুলিশ হোটেলের ১০২ নম্বর কক্ষ থেকে পর্যটককে উদ্ধার করে এবং ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে এবং গ্রেফতারদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আসামিকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে কুয়াকাটা পৌর যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মো. ফারুক বলেন, ব্যক্তির দায় দল বহন করবে না। কেউ যুবদলের নাম ব্যবহার করে অপকর্ম করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
What's Your Reaction?






