১২ বছরের শিশুকন্যার সঙ্গে দুই সন্তানের পিতার বিয়ে: প্রশাসনের নীরবতায় প্রশ্ন উঠেছে

ভোলা প্রতিনিধি:
ভোলার দক্ষিণ আইচা থানার নজরুল নগর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে একটি চাঞ্চল্যকর এবং আইনবিরোধী বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটেছে। মাত্র ১২ বছর বয়সী এক কন্যাশিশুর সঙ্গে মোহাম্মদ জাফর ইকবাল (৩৪), পিতা লালু প্যাদা-যিনি ইতোমধ্যে দুই সন্তানের জনক-আড়াই লাখ টাকা দেনমোহরে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, এই বিয়ে ভোলা সদর উপজেলার বাংলা স্কুল মোড় এলাকার মালেক কাজীর অফিসে সম্পন্ন হয়। বিয়ের কাজ সম্পাদন করেন মাওলানা জিল্লুর রহমান। সূত্র আরো জানায়,মেয়েটির অনলাইন কৃত জন্ম নিবন্ধন কার্ডে জন্ম তারিখ ০১-০১-২০১২ ইং-অতএব মেয়েটির বয়স(১৩)বছর,অন্যদিকে বিবাহ সম্পন্ন হওয়া কাবিননামায় মেয়েটির বয়স দেখানো হয়েছে ০১-০১-২০০৬ যা সম্পূর্ণ প্রতারণা ও আইন বিরোধী কাজ। এবং দীর্ঘধীন এই কন্যাশিশুকে বিবাহ করে দেনমোহরের কাগজ আড়াল রেখে গোপনে সংসার চালায়। হঠাৎ করে বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা অনুসন্ধান চালালে সম্প্রতি ঘটনাটি জনসম্মুখে আসে।
ভুক্তভোগী শিশুকন্যাটির পরিবারে তার নিজের কোনো স্বজন নেই; সে সৎ মায়ের সঙ্গে বসবাস করছিল। অভিযোগ রয়েছে, একটি অচেনা (রং) নম্বর থেকে তাকে প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয়।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে একটি শিশু বিবাহ জনসম্মুখে, প্রশাসনের নাকের ডগায় সম্পন্ন হলো-তা প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তার এক করুণ দৃষ্টান্ত।
স্থানীয় এক মানবাধিকারকর্মী বলেন, “একজন প্রাপ্তবয়স্ক ও বিবাহিত দুই বাচ্চা ওয়ালা পুরুষের সঙ্গে ১২ বছরের এক শিশুর বিয়ে শুধু আইনের লঙ্ঘন নয়, এটি একটি ভয়াবহ সামাজিক অপরাধ। প্রশাসনের নীরবতা এই অপরাধকে আরও উৎসাহিত করছে।”
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে মুসলিম পারিবারিক আইনে ১৮ বছরের নিচে মেয়েদের বিয়ে করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং এটি ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। আইনের আওতায় এ ধরনের বিয়েতে জড়িত বর, অভিভাবক, কাজী ও সাক্ষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে।
এলাকার সাধারণ জনগণ ও সচেতন মহল অবিলম্বে বিয়েটি বাতিল, শিশুটির পুনর্বাসন এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। ঘটনার সম্পর্কে মেয়েটির সাথে কথা হলে তিনি জানান আমি নিরুপায়। অন্যদিকে ছেলের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা কালে কেউই কথা বলতে রাজি হয়নি।
এই ব্যাপারে চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসনা শারমিন মিথি বলেন, আমরা বিষয়টি জেনেছি এবং তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে এবং কাজীর নিবন্ধন বাতিলসহ তাকে আইনের আওতায় আনা হবে
What's Your Reaction?






