কুয়াকাটায় জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি

May 21, 2025 - 14:54
 0  28
কুয়াকাটায় জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি

বিশেষ প্রতিবেদকঃ পটুয়াখালীর কুয়াকাটা উপকূলীয় এলাকার লতাচাপলী ইউনিয়নের খাজুরা গ্রামে দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে ভোগদখল করা জমি অবৈধভাবে দখল করে বসতঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। আদালতে মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় সেখানে বসতবাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন জমির মালিক মো. আবুল কাসেম ব্যাপারি। জানা গেছে, ২০০৫ সালে মৃত নবী খাঁর ওয়ারিশদের কাছ থেকে দলিল মোতাবেক ১.৫০ একর জমি ক্রয় করেন আবুল কাসেম ব্যাপারি। এসএ রেকর্ড অনুযায়ী ওই জমির দাগ নং ৪১৩৭, ৩৯৮৯, ৩৯৯০, ৩৯৯১ ও ৩৯৯২-এর মধ্যে ছিল। পরে বিএস রেকর্ডে জমির অংশগুলো স্থানান্তর হয়ে ৪০৭৭ নং দাগ থেকে ৫০ শতাংশ এবং ও ৪৭৮৭ নং দাগ থেকে ৯০ শতাংশ জমি দেয়া হয়। তবে বিএস রেকর্ডে জমির পরিমাণ ১০ শতাংশ কম আসে। এছাড়া দাগ নং ৪০৭৬-এর ৮ শতাংশ জমি ‘খাস’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এই অসামঞ্জস্য ও জমির দখল নিয়ে বিরোধ শুরু হলে কাসেম ব্যাপারি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি চলমান অবস্থায়ই স্থানীয় প্রভাবশালী শামছুল পঞ্চায়েতের প্রত্যক্ষ সহায়তায় নুর মোহাম্মদ ফরাজী সেখানে বসতবাড়ি নির্মাণ শুরু করেন। পরে নির্মাণ বন্ধে কাসেম ব্যাপারি মহিপুর থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ এসে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেয়। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই ফের নির্মাণ শুরু হয়। পরে স্থাপনা নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে কাসেম ব্যাপারি আদালতে আবেদন করলে তা গৃহীত হয়। অথচ তার কার্যকর প্রতিফলন মাঠপর্যায়ে দেখা যাচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, মহিপুরের এক বিএনপি নেতা কাসেম ব্যাপারির ভোগদখলীয় জমি ও বাড়ির ভেতরে খুঁটি বসিয়ে বাড়ির সামনের খালের মধ্যে সীমানা নির্ধারণ করে দেন। যা এসএ রেকর্ডে ‘খাস’ হিসেবে চিহ্নিত ছিল। আবুল কাসেম ব্যাপারি অভিযোগ বলেন, ‘আমাকে নানাভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। শামছুল পঞ্চায়েত, নুর মোহাম্মদ ফরাজী, হেমায়েত ফরাজী ও মোস্তফা মুসল্লি প্রায়ই আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে।’ আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে জমি ভোগ করে আসছি। এখন আমার বাড়ির ভেতর পর্যন্ত দখলের চেষ্টা চলছে। আমি মামলা করেছি, তবুও নির্মাণ থামছে না। পরিবার নিয়ে ভয়ে দিন কাটাচ্ছি।’ অন্যদিকে অভিযুক্ত নুর মোহাম্মদ ফরাজীর কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তার বাবা হেমায়েত ফরাজী বলেন, ‘এ জমি সামছুল পঞ্চায়েত আমাদেরকে থাকার জন্য দিয়েছেন।’ এবিষয়ে শামছুল পঞ্চায়েতের বক্তব্য নিতে তার মুঠোফোনে কল দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসিন সাদেক বলেন, ‘বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানলাম। ওখানে তহসিলদার পাঠিয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ ভুক্তভোগী আবুল কাসেম ব্যাপারি প্রশাসনের কাছে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের এবং নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow