ছাত্রদলের কমিটিতে বিতর্কিত ছাত্রলীগ নেতাদের অন্তর্ভুক্তি, পদত্যাগ ও প্রতিবাদে উত্তপ্ত মহিপুর

মহিপুর (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি পটুয়াখালীর মহিপুর মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সদ্যঘোষিত কমিটি নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। দলীয় আদর্শ থেকে সরে গিয়ে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের অন্তর্ভুক্তির কারণে ছাত্রদলের ভেতরেই ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। গত ৬ মে রাতে ঘোষিত ১০ সদস্যের এই কমিটিতে মো. রবিউল ইসলামকে সভাপতি ও হাসিবুল হককে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত করা হয়। কমিটিটি অনুমোদন দেন পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীম চৌধুরী ও সদস্যসচিব জাকারিয়া আহম্মেদ। পরদিন ৭ মে (বুধবার) বিকেলে কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সদ্যঘোষিত কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি রাইসুল ইসলাম রুপু ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সিয়াম অভিযোগ করেন— দীর্ঘদিনের ত্যাগী ও আদর্শবান নেতাকর্মীদের উপেক্ষা করে বিতর্কিত ব্যক্তিদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। লিখিত বক্তব্যে রুপু বলেন, কমিটিতে সভাপতি মনোনীত মো. রবিউল ইসলাম ছাত্রলীগের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অংশগ্রহণ করেছেন, যার প্রমাণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে। সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হক ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে কখনো যুক্ত ছিলেন না বলেও দাবি করা হয়। একইভাবে কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক সাকিবুল হাসান রাফিকে ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দপ্তর সম্পাদক হিসেবে মনোনীত ইমন, মহিপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ খানের অনুসারী বলেও অভিযোগ ওঠে। এই কমিটি ঘোষণার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্রলীগের নেতারা তাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্ট দেন, যা বিতর্ককে আরও উসকে দেয়। ফলে কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি রাইসুল ইসলাম রুপু ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সিয়াম পদত্যাগ করেন। তারা অবিলম্বে এই কমিটি বাতিল করে নতুন, ত্যাগী ও আদর্শবান নেতাদের নিয়ে গঠনের দাবি জানান। বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা রবিউল ইসলাম দাবি করেন, ছাত্রলীগের সঙ্গে তার ছবি থাকলেও সেগুলো তাকে জোর করে তোলা হয়েছিল। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন এবং তার বিরুদ্ধে এটি একটি ষড়যন্ত্র। এ ঘটনায় কলেজ ও মহিপুর থানা ছাত্রদলের অনেক সাবেক ও বর্তমান নেতারা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা মনে করছেন, আদর্শচ্যুত ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের দিয়ে কমিটি গঠন করে সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হয়েছে। অন্যদিকে, ছাত্রদলের একটি পক্ষ দাবি করছে, কমিটিতে ত্যাগী কর্মীদের মূল্যায়ন করা হয়েছে এবং এটি একটি মহলের ষড়যন্ত্রের অংশ। জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীম চৌধুরী বলেন, "মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজ কমিটি নিয়ে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।"
What's Your Reaction?






