বাবুল আহমেদ মানিকগঞ্জ থেকে,
মানিকগঞ্জে ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় মার্চ মাসে ভ্যাকসিন নেওয়ার হার কমেছে। জেলায় করোনা ভ্যাকসিন কার্যক্রমের ১ম পর্যায়ের ডোজের জন্য টিকা রয়েছে ৪৮ হাজার।
এ পর্যন্ত ৫৭ হাজারের বেশি ব্যক্তি নিবন্ধন সম্পন্ন করলেও শেষ হয়নি ১ম পর্যায়ের ডোজের টিকা। গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া কার্যক্রমে মাত্র ১৮ কার্যদিবসে ২২ হাজার ছয়শো ৫৫ জন টিকা নিয়েছেন। এ পর্যন্ত জেলায় ৩৮ হাজার আটশো ৩৪ জন ব্যক্তি ভ্যাকসিন নিয়েছেন। তবে মার্চ মাসে টিকা গ্রহণের হার কমে গেছে।
এদিকে, গত বছরের ডিসেম্বর মাসের পর থেকে জেলায় করোনায় আক্রান্তের হার কমে আসলেও চলতি বছরের মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে তা আবার বাড়তে শুরু করেছে।
রোববার (২৮ মার্চ) সকালে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিক্যাল অফিসার ডা. রফিকুন্নাহার বন্যা বিষয়টি জানিয়েছেন।
সিভিল সার্জন কার্যালয় জানায়, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজে ১টি, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ১টি ,পুলিশ হাসপাতালে ১টি এবং ৬টি উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১টি করে করোনা ভ্যাকসিন কেন্দ্র রয়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধের টিকা প্রয়োগে ৩৭টি টিম কাজ করছে। কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজে ৮টি, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ৮টি, পুলিশ হাসপাতালে ১ এবং উপজেলাগুলোতে ৩টি করে মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়া, ২টি টিম সিভিল সার্জন কার্যালয়ে রির্জাভ রয়েছে। প্রতিটি টিমে ২ জন করে টিকাদান কর্মী ও ৪ জন করে স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন।
মেডিক্যাল অফিসার ডা. রফিকুন্নাহার বন্যা জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের কেন্দ্রে ৪ হাজার পাঁচশো ৮৮ জন পুরুষ ও ২ হাজার পাঁচশো ৮২ জন নারী, কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজ কেন্দ্রে আটশো ৬ জন পুরুষ ও চারশো ৭ জন নারী, পুলিশ লাইন কেন্দ্রে ছয়শো ৯ জন পুরুষ ও ৯৮ জন নারী, শিবালয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কেন্দ্র ১ হাজার চারশো ৯৬ জন পুরুষ ও আটশো ৪৯ জন নারী, ঘিওর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কেন্দ্র ১ হাজার ৮৯ জন পুরুষ ও ছয়শো ২৪ জন নারী, সাটুরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কেন্দ্র ২ হাজার ১৭ জন পুরুষ ও ১ হাজার তিনশো ১৯ জন নারী, সিংগাইর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কেন্দ্র ১ হাজার চারশো ৭০ জন পুরুষ ও সাতশো ৯১ জন নারী, হরিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কেন্দ্র ১ হাজার তিনশো ৪৬ জন পুরুষ ও নয়শো ৬২ জন নারী, দৌলতপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কেন্দ্র ১ হাজার একশো ১৭ জন পুরুষ ও চারশো ৮৫ জন নারীসহ মোট ২২ হাজার ছয়শো ৫৫ জন ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন। তবে পহেলা মার্চ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত জেলায় ১৬ হাজার একশো ৭৯ জন করোনা ভ্যাকসিন নিয়েছেন।
এদিকে, গত ডিসেম্বর মাসে জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিলো ১৪১ জন। জানুয়ারি মাসে রোগীর সংখ্যা কমে হয় ৫৪ জনে। ফেব্রুয়ারি মাসে তা আরও কমে হয় ১৫ জন। মার্চ মাসের ১ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগী ছিলো মাত্র ১০ জন। তবে ১৪ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত মাত্র ১৩ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫ জন ব্যক্তি।
সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ জানান, সাধারণ মানুষের অনীহার কারণে গত মাসের তুলনায় ভ্যাকসিন নেওয়ার হার কমেছে। এছাড়া স্বাস্থ্য বিধি না মেনে চলাফেরা করার কারণে করোনা আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। সবাইকে মাস্ক পরার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার আহবান জানান তিনি।