31 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪

কবি শামসুর রাহমান’র ৯১ তম জন্মদিন

আজ (২৩ অক্টোবর) বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি, সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক, উপন্যাসিক, কলামিস্ট, অনুবাদক ও গীতিকার শামসুর রাহমান’র ৯১তম জন্মবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।

পঞ্চাশ দশক থেকে শুরু করে একাধারে প্রায় ছয় দশকেরও বেশি সময় তিনি বিরতিহীনভাবে সাহিত্য-সাংবাদিকতা ও সংস্কৃতিক্ষেত্রে কাজ করেন।

তাঁকে বাংলা সাহিত্যে ‘স্বাধীনতার কবি’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। আধুনিক বাংলা কবিতায় সৃষ্টি ও মননের দ্যুতিময় উপস্থাপনা তাঁকে নিয়ে যায় অনন্য উচ্চতায়।

কবি হিসেবে দুই বাংলায় সমান জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। তাঁকে নাগরিক কবিও বলা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ওপর তাঁর লেখা দুটি কবিতা অত্যন্ত জনপ্রিয়তা পায়।

বিংশ শতাব্দীর তিরিশের দশকের ৫ বিশিষ্ট কবির পর আধুনিক বাংলা কবিতার প্রধান পুরুষ হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাঁকে।

শামসুর রাহমানের জন্ম ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর ঢাকার মাহুতটুলির নানাবাড়িতে। তাঁর পৈতৃক বাড়ি নরসিংদী জেলার রায়পুরার পাড়াতলী গ্রামে। বাবা মুখলেসুর রহমান চৌধুরী ও মা আমেনা বেগম।

তিনি ১৯৪৫ সালে পুরোনো ঢাকার পোগোজ স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৪৭ সালে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আই এ পাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিষয়ে ভর্তি হন এবং তিন বছর নিয়মিত ক্লাসও করেছিলেন সেখানে। শেষ পর্যন্ত আর মূল পরীক্ষা দেননি। পাসকোর্সে বিএ পাশ করে তিনি ইংরেজি সাহিত্যে এম এ (প্রিলিমিনারি) পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করলেও শেষ পর্বের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি।

১৯৫৭ সালে একজন সংবাদকর্মী হিসেবে দৈনিক মর্নিং নিউজ পত্রিকায় কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। ১৯৫৭ সালে রেডিও পাকিস্তানে অনুষ্ঠান প্রযোজক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত সেখানে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬০ সালে আবার মর্নিং নিউজে ফিরে আসেন এবং ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত মর্নিং নিউজের সহযোগী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৪ সালের শেষের দিকে দৈনিক পাকিস্তানে সহকারী সম্পাদক পদে যোগ দেন শামসুর রাহমান।

স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে ওই পত্রিকাটি দৈনিক বাংলা নামে প্রকাশিত হয়। ১৯৭৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি দৈনিক বাংলা ও সাপ্তাহিক বিচিত্রার সম্পাদক নিযুক্ত হন।

১৯৮৭ সালে সামরিক সরকারের শাসনামলে তিনি দৈনিক বাংলা থেকে পদত্যাগ করেন। এর পর সাহিত্য পত্রিকা অধুনার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৬০ সালে কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে’ প্রকাশ পায়। শামসুর রাহমানের লেখা উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘বিধ্বস্ত নীলিমা’, ‘নিরালোকে দিব্যরথ’, ‘আমি অনাহারী’ প্রভৃতি।

তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ৪৮টি, ১০টি কাব্য সমগ্র, চারটি উপন্যাস, দুইটি গল্প সমগ্র, দুইটি কলাম, পাঁচটি অনুবাদ কবিতা, দুইটি অনুবাদ নাটক, একটি জীবনী, ১০টি শিশুতোষ গ্রন্থসহ মোট ৯৮টি বই প্রকাশ পায়।

আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাদীনতা দিবস পদক, ভারতের আনন্দ পুরস্কারসহ বেশ কিছু পুরস্কার লাভ করেন তিনি। ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করে কবিকে।

তিনি ২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকায় ইন্তেকাল করেন।

- Advertisment -

সর্বশেষ সংবাদ