ইউসুফ ইউহানা, কলাপাড়া প্রতিনিধিঃ
বৈরী আবহাওয়া কাটিয়ে গভীর সমুদ্রে ইলিশের সন্ধানে যাওয়া জেলেরা উপকূলের ফিরতে শূরু করেছে । চলমান বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে সমুদ্রে থেকে আসতে শুরু করেছে হাজার হাজার ফিশিং বোট।
গত মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে মহিপুর-আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, অবতরণ কেন্দ্রের জেটিতে অবস্থান করছে অনেকগুলো ট্রলার। এসব ট্রলারে জ্বালানি তেল, বরফ, জাল ও খাদ্যসামগ্রী তোলা হচ্ছে। তারা আশা করছিলেন সমুদ্র থেকে কাঙ্খিত ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরবেন।
কিন্তু সে আশা আর পুরন হলো না। জানা গেছে, মৌসুমী বায়ু ও লঘুচাপের প্রভাবে আবহাওয়া খারাপ হয়ে নিম্নচাপে রূপ নিচ্ছে। তীরে ফিরতে বাধ্য হয় জেলেরা। এর আগে গত ২৩ জুলাই মধ্যরাতে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ২৪ জুলাই থেকে মাছ শিকারে নামে উপকূলের হাজারও জেলে। তবে ভরা মৌসুমেও কাঙ্খিত ইলিশের দেখা না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন তারা। উপকূলের জেলেরা বুক ভরা আশা নিয়ে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দিচ্ছিল ট্রলারগুলো। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। খালি হাতে ঘাটে ফিরে আসে। তবে বৈরী আবহাওয়া কাটিয়ে সমুদ্র আবার ফ্রেসিং করবে।
মৎস্যবন্দর আলীপুরের ট্রলারের মাঝি হাবিবুল বলেন, আজকে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় সমুদ্র থেকে খালি ট্রলার নিয়ে ফিরে এসেছি। আশা করছি আবহাওয়া দ্রুত সাভাবিক হয়ে যাবে।ট্রলারের জালে প্রচুর ইলিশ মাছ ধরা পড়বে।’
এছারা একজন মাঝি আমির গাজী বলেন, ‘৬৫ দিনের অবরোধের পর মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল ছিলো। এরপর আবার লঘুচাপের প্রভাবে সাগরে নিম্নচাপ ছিলো। যার কারণে ঘাটে বসে অলস সময় পার করতে হয়েছে। আবহাওয়া মোটামুটি ভালো ছিল। তাই সমুদ্রে যাচ্ছিলাম। আশা করছিলাম জালে কাঙ্খিত ইলিশ মাছ ধরা পড়বে। কিন্তু এখন আবার বৈরী আবহাওয়ার কারনে তীরে ফিরে এসেছি।
ট্রলার মালিকরা বলেন, ‘পুরো মৌসুমে কাঙ্খিত ইলিশ মাছ শিকার করতে পারিনি। সামনে আশ্বিন মাসের ২২ দিনের অবরোধ। এখন ইলিশ মাছ ধরাতে না পাড়লে লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবো না। তাহলে পুরো মৌসুমী লোকসানের ঘানি টানতে হবে। আশা করছি অবরোধের আগে বৈরী আবহাওয়া কাটিয়ে ভালো ইলিশ মাছ শিকার করতে পারবো।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্র বার বার খারাপ হচ্ছে, ফলে গত কয়েক বছর আমরা দেখেছি গভীর সমুদ্রে লম্বা জালে কিছু মাছের দেখা পেলেও ভাসান জাল, কালো কট বা লাল জালের অধিকাংশ জেলেরা কিন্তু তেমন ইলিশ পাননি। সমুদ্রের মোহনা খনন এবং সমুদ্রের ভিতরে ১২/১৪ কিলো যে পলি বা চর পড়ে গেছে সেটা খনন করতে হবে, সেই সাথে মানুষের যে দূষণ, উপকূলবর্তী দূষণ, পলি ও রাসায়নিক দূষণ রোধ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই নতুন মৎস্য প্রাণী উপদেষ্টার সাথে কথা বলেছি, আমরা চেষ্টা করতেছি জেলেদের এই রকম কার্যক্রম বেগবানে বৈজ্ঞানিক কি কি পদক্ষেপ নেওয়া যায়। সে বিষয় সরকার ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, আশা করছি অতি শীঘ্রই এটা বাস্তবায়ন হবে। ক্ষতিগ্রস্থ জেলেদের ব্যাপারেও সরকার ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছেন।