ঈদে মুক্তি পাওয়া অনন্ত জলিলের ‘কিল হিম’ সিনেমা নিয়ে একটি ব্লগ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে পোস্ট করেন টিকটকার শাকিলা পারভীন। ভিডিওটি পোস্ট করার পর বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে এ নিয়ে সংবাদও প্রকাশ হয়। এর জের ধরেই শাকিলা ফেইসবুক ওয়ালে সব সাংবাদিকদের ‘হলুদ সাংবাদিক’ আখ্যা দিয়ে একটি পোস্ট দেন। তারই ধারাবাহিকতায় এক অনুসন্ধানের বের আসলো চাঞ্চল্যকর এক তথ্য। শাকিলার লাল গাড়ীর মালিক মিরপুরের এক ডাক্তার!
শাকিলা পারভিন টিকটক থেকে একটি মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করে মিডিয়া অঙ্গণে পা রাখলেও তার চলাফেরা আর লাইফ স্টাইল মানুষের নজড়ে এসেছে। অল্পদিনের ক্যারিয়ারে এই অভিনেত্রী চলেন আলিশান ভাবে, চালান প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার একটি লাল গাড়ী। যাহার নাম্বার ঢাকা মেট্রো-ঘ ২১-৬০৬২। একটি সূত্রের খবরে জানা যায়, গাড়ীটির মালিক মিরপুরের এক গার্মেন্ট ব্যবসায়ীর। পরে সিআইডি এক কর্মকর্তার মাধ্যমে গাড়ীটির কাগজ বের করা হলে সেখানে মালিক হিসেবে দেখা যায় ড. মোঃ খোরশেদ আলম নামের নাম। তার বাবার নাম মৃত আব্দুল মান্নান। বাড়ী মিরপুর ১১ এ।
এ নিয়ে ড. মোঃ খোরশেদ আলমের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি না স্বীকার করে বলেন, আমার গাড়ীটা লাল ঠিক আছে। কিন্তু গাড়ীটি বর্তমানে আমার গ্যারেজে পড়ে আছে। কিন্তু শাকিলা পারভিনকে বিভিন্ন শুটিং লোকেশনে এই লাল গাড়ী (ঢাকা মেট্রো-ঘ ২১-৬০৬২) চালাতে এবং তার সামনে টিকটক করতে দেখা গেছে।
গাড়ীর বিষয়ে শাকিলা পারভিনের থেকে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, আমার নাটক, মিউজিক ভিডিওসহ বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে টাকা জমিয়ে বাকী টাকা আমি ব্যাংক লোন মাধ্যমে কিনেছি। কিন্তু এখন গাড়ীটির বিষয়ে জানতে চাইলে বেশ পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে এবং বিভিন্ন জনকে তার লাল গাড়ীটি তিনি বিক্রি করে দিয়েছে বলে দাবি করেছে। তাহলে আসলে এই লাল গাড়ীটা কার? নেয়া হয় ব্যাংকে ট্যাক্স দিবার তথ্য।
তথ্যে জানা যায়, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ার থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত গাড়ীর কাগজ আর ট্যাক্স ফি ধানমন্ডি শাখার ওয়ান ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দেয়া হয়েছে। কিন্তু টিকটক করার সময় গাড়ীটি ২০২৩ সালের জানুয়ারী থেকে তার কাছে দেখা গেছে। যা এখন পর্যন্ত ড্রাইভার নিয়োগ দিয়ে নিজের কাছে রয়েছে গাড়ীটি। কখনো বলছেন গাড়ীটি বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। যা একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, দুবাই ঘুরতে যাওয়ায় তাকে গাড়ীটি গিফট করেন ওই গার্মেন্টস ব্যবসায়ী!
আরও সূত্রের খবরে জানা যায়, শাকিলা পারভিন প্রতিদিন রাত ৯ টার পর ওয়েস্টিন বাংলাদেশের স্বনামধন্য এক গ্রুপের চেয়ারম্যানের আমন্ত্রণে প্রতিদিন মদের পার্টিতে যােগ দেন। সেখানে তাকে প্রতিরাতে ৫০ হাজার টাকা করে নেন তিনি। সূত্রটি আরও জানায়, এরআগেও তিনি দুবাইয়ের হান্নান শাহ নামক ব্যবসায়ীর থেকে প্রেমের ছলনায় প্রায় ৭ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন এই অভিনেত্রী।
এরআগেও তাকে নিয়ে অনুন্ধানে বের হলে বেশ কিছু আওয়ামী লীগের পুলিশ প্রশাসন দিয়ে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ঢাকার কাফরুল থানার ৭নং রোডে, সি ব্লক, ২৮ নং এ শাকিলা পারভিনের বাসা। সেখানে গিয়ে সরজমিনে দেখা যায় একটি ৮ তলার একটি বাড়ী। তার নীচে একাধিক দোকান রয়েছে। শাকিলা সম্পর্কে এক দোকান ব্যবসায়ীর কাছে গিয়ে জানা যায়, তার বাবারা আগে থেকে এখানকার বাসিন্দা। শাকিলার বাবা আগে থেকে সিএনজি চালাতেন, চোখে সমস্যা রয়েছে। তার কারণে এখন আর সিএনজি চালান না। এক কথায় তার বাবা এখন বেকার। পুরো সংসার চালান শাকিলা নিজেই। পত্রিকসূত্রের তার দাদার জায়গা থাকলেও ডেভেলপারের মাধ্যমে বাসাগুলি ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়েছেন। শাকিলার একটা ভাই আছে। কোন কিছু করতো না। বেকার ছিল। ইদানিং তার মাধ্যমে একটি চাকরী পেয়েছে। বেতন প্রায় ৬০ হাজার টাকা। তাছাড়া শাকিলাকে মহল্লায় তেমন দেখা যায় না। তিনি রাত-বিরাতে বেশি আসতেন।
রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত আরও বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শাকিলা পারভীনের মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।