31 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪

এমন মরা সংকটের দেশে নারী কি পোষাকে সাজবে এসব কখনো আন্দোলনের টপিক হতে পারে না

ব্লাউজ ছাড়া শাড়ি পরে ছবি আপ্লোড করলেই এখন ইন্সট্যান্ট দেখা যাবে আপনারা কে কত রকমের সিডিউস হতে পারেন।কত জ্বলুনী আপনাদের পুরুষ শরীরে।মুখোসের আড়ালে আপনাদের কুৎসিত মনটাকে আলোয় এনে দেখবো কতোটা নোংরা, কতোটা অসহনশীল আপনারা নারীদের প্রতি।যাস্ট উদাহারণ দিলাম।কি পরবো আর কি পরবো না আমার ড্রেস কোড আমিই সিলেক্ট করার সম্পূর্ন অধিকার রাখি।

পজিটিভলি ভেবে দেখুন,সত্যিই তো গ্রামের দাদী-নানীরা, মা-চাচীরা আজও ব্লাউজ ছাড়া এক প্যাঁচে শাড়ি পরেন। কই! কেউ তো তাদের দেখে শিহরিত হয় বলে কখনো শুনিনি।বাংলাদেশে কি সব শুধুই মুসলিম পরিবার? এখানে হিন্দু পরিবারের অনেক যুবতী, মা, বউঠান এখনো ব্লাউজ ছাড়া শাড়ি পরেন।স্নান সেরে পুকুর ঘাট থেকে শুধু শাড়ি পেঁচিয়েই তারা ঘরে ফেরেন।আরেকটু পেছনে তাকাই।দেশ স্বাধীনের পর এক টাকার নোটে চাল গুড়ো করা কাহিল-ছিয়া পাড় দেয়া ব্লাউজ বিহীন শাড়ি পরা যুবতী নারীর ছবিটি দেখে কেউ কখনো সিডিউস হতো বলে বাবা, চাচাদের মুখেও তো শুনিনি।

অন্ধকারে আপনারা সম্পূর্ন উলঙ্গ পর্ন দেখে ভোগ বিলাস করবেন আত্মতৃপ্তি নিবেন আর আলোতে সেই নারীই যখন তার পোষাক স্বাধীনতায় যা খুশি নিজের স্বাচ্ছন্দ্যমত পরতে চাইলো ওমনিই আপনারা কিয়দাংশ নারী পুরুষ নির্বিশেষে হামলে পড়লেন আন্দোলনে।এত এত আন্দোলনের টপিক ফেলে আবার সেই নারীর পোষাকের পেছনেই এসে আপনারা পরলেন।একচ্যুয়ালই, হোক ধর্ষন কিংবা ড্রেস কোড নারীকে বস্তায় ভরতে না পারলেই আপনাদের হচ্ছে না।বলছি না, নারী বিকিনি পরেই রাস্তায় হাঁটুক।বলছি না, নারী ব্লাউজ ছাড়াই শাড়ি পরুক।লক্ষ্য করুন,আপনারা কখন কি পরছেন কখনো কি শুনেছেন আপনাদের ড্রেস কোড নিয়ে নারীরা কটুক্তি করেছে বা বিদ্রুপ করেছিলো কোন কালে?

ধর্মীয় অনুশাষনের অজুহাত যদি দেন, ধর্মের কয়টা নিয়ম আপনারা কয়জনে মেইন্টেইন করেন ঠিকমত এটুকু নিজের বিবেককে জিজ্ঞাসা করুন।ধর্ম যদি মেইন্টেইন করতেনই ভুলে যেয়েন না একটা নারী লাঞ্চিত হয়,ধর্ষিত হয় একজন পুরুষের হাতেই,নারীর হাতে নয়।নারীকে ধরে লাঞ্চিত করে দেবার সময়,বাসে-ট্রামে তার অসাবধনতা বশত কাপড় সরে যাওয়া শরীর দেখে উত্তেজিত হবার সময়,ব্যাড কমেন্টস করার সময় কোথায় থাকে আপনাদের ধর্ম?নারী খোলামেলা পোষাকে বের হলে নাযায়েজ আর তাকে অশালীন ব্যাখ্যা দিয়ে ধরে করে দেয়াটাই কি তাহলে আপনাদের জন্য যায়েজ,তাই না??

দেশের এমন খারাপ পরিস্থিতিতে মুদ্রাস্ফীতি রোধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন।বিদ্যুৎ, জ্বালানী,জল সাশ্রয়ে আন্দোলন করুন।দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতির লাগাম টেনে ধরুন।বাচ্চাদের শিক্ষা ব্যাবস্থার উন্নয়নে চোখ রাখুন।রাস্তা ঘাট যানজট ছুটিয়ে ঘোড়া ছোটাতে যাত্রা পথটি পরিছন্ন সহজলভ্য করুন।এমন হাজারটা প্রতিবন্ধকতার দেশে এই মুহূর্তে আমি আমার বুক দেখালাম নাকি পেট দেখিয়ে শাড়ি পরলাম সেদিক থেকে চোখ সরিয়ে আসন্ন সংকট নিরসনে মনযোগী হোন।এমন মরা সংকটের দেশে নারী কি পোষাকে সাজবে এসব কখনো আন্দোলনের টপিক হতে পারে না।

-ওয়াহিদা সুলতানা লাকি
অনলাইন এক্টিভিস্ট।
০৮/০৯/২২

- Advertisment -

সর্বশেষ সংবাদ