31 C
Dhaka
রবিবার, এপ্রিল ২৮, ২০২৪

বঙ্গবাজারে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ

রাজধানীর বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কিছু বলেননি বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সময় পরিকল্পনামন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ব্যথিত হয়েছেন। তিনি বলেছেন, এসব দোকানের ইনস্যুরেন্স করা থাকে না, সেজন্য তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আমাদের ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে। তবে এ ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে কোনো কিছুই বলেননি প্রধানমন্ত্রী।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল ৬টা ১০ মিনিটের দিকে আগুন লাগার খবর পাওয়া যায়। এরপর থেকে প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় বেলা ১২টা ৩৬ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা রয়টার্স, এপি, আলজাজিরা, দ্য গার্ডিয়ান ও সিজিটিএন, ডেকান হেরাল্ড, আল আরাবিয়া নিউজ, আরব নিউজ, হিন্দুস্তান টাইমস-সহ প্রধান প্রধান আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা ও সংবাদমাধ্যমে এসেছে।

বঙ্গবাজার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অনেকটা ক্ষুব্ধ হয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জানিয়েছেন, ২০১৯ সালের ২ এপ্রিল এই মার্কেটটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপর ১০ বার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।

রাজধানী ঢাকার বঙ্গবাজার এলাকায় এই অগ্নিকাণ্ডের খবর এসব মিডিয়া ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার পর থেকেই আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ ঘটনার তাৎক্ষণিক খবরও প্রচার করা হয়।

সংবাদমাধ্যম বলছে, মঙ্গলবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে এই আগুন লাগার তথ্য পাওয়া যায় বলে ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। কিন্তু ঠিক কীভাবে আগুন লেগেছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, সেখানে চার হাজারের বেশি দোকান আছে। মূলত বঙ্গবাজার পাইকারি ও খুচরা কাপড়ের জন্য বাংলাদেশের প্রধান ও পরিচিত মার্কেটগুলোর একটি।

এদিকে আগুনের ঘটনা জানার পর ঢাকা এবং আশপাশের জেলার সবগুলো ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট সেখানে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। একপর্যায়ে সেখানে ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে নিযুক্ত হয়।

আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয় সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীসহ সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটও। দীর্ঘ সময় ধরে আগুন জ্বলতে থাকায় বঙ্গবাজার ও আশপাশের কয়েকটি মার্কেটে আগুন ছড়িয়ে পড়ে বলে জানা গেছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সম্মিলিত সাহায্যকারী দল পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারও ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে ঢাকার বঙ্গবাজার মার্কেটে আগুনের সূত্রপাত হয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা রাফি আল ফারুক টেলিফোনে দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস নিউজ এজেন্সিকে জানিয়েছেন। পরে অবশ্য ফায়ার সার্ভিসের কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ঢাকার পোশাক কারখানায় টমি হিলফিগার এর মতো পশ্চিমা ফ্যাশন ব্র্যান্ডের জন্য উৎপাদিত কিন্তু রপ্তানি মান পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়া কাপড় এই বঙ্গবাজারে বিক্রি হয়ে থাকে এবং এই কারণে অগ্নিকাণ্ডের শিকার মার্কেটটি সবার কাছেই বেশ জনপ্রিয় গন্তব্য।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, দুর্বল পর্যবেক্ষণ এবং যথাযথ অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবের কারণে বাংলাদেশের বহু বাণিজ্যিক স্থানে প্রায়ই আগুন লেগে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের পোশাক শিল্পখাত গত এক দশকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নয়ন হয়েছে।

- Advertisment -

সর্বশেষ সংবাদ