31 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪

কুয়াকাটায় জাপা’র সাবেক মহাসচিবের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

মুন্সী ইউসুফ, কলাপাড়া প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় জাতীয় পার্টি–জাপা’র সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী একটি পরিবার।

শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করা হয়। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাবেক মন্ত্রী রুহুল আমিন হাওলাদার।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী মো. ওসমান গণি শেখ অভিযোগ করে বলেন, রুহুল আমিন হাওলাদার ক্ষমতার দাপটে মামলা-হামলা ও প্রশাসনের মাধ্যমে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাদের রেকর্ডীয় সাড়ে ২৭ শতাংশ জমি দখলে নেয়। জমি বিক্রি করতে না চাইলে নানা ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়ে একটি ভুয়া চুক্তিপত্র সৃষ্টি করে দলিল সম্পাদনে ব্যর্থ হয়ে বিভিন্ন এলাকায় মিথ্যা মামলা দিয়ে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের জেল হাজতে পাঠায়। জমির দলিল নিতে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। জীবনের ভয়ে আমরা বাড়িঘর ছেড়ে দীর্ঘদিন পালিয়ে বেড়িয়েছি।

সংবাদ সম্মেলন তিনি আরো বলেন, জে, এল ৩৪নং লতাচাপলী মৌজার এস,এ ১২৯৩ নং খতিয়ানের ৫১৮৫ বাটা ৫৪৭৬ নং দাগের অংশ হইতে সাড়ে ২৭ শতাংশ জমির সাব-কবলা খরিদ মূলে আমি ওসমান গণি ও তার ছোট ভাই মো. ছোবাহান শেখ, দোজাহান শেখ ও নুর ইসলাম শেখ মালিক। একই দাগ খতিয়ানে আমাদের আরেক ভাই মো. শাহ আলম শেখ এর ০৪ (চার) শতাংশ জমি রয়েছে। জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব, সাবেক মন্ত্রী এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার শাহ আলম শেখ এর অংশের ০৪ (চার) শতাংশ জমি ক্রয় করেন। তখন আমাদের জমি আমাদের দখলেই ছিল। কিন্তু আমাদের তফসিল বর্ণিত জমির উপর তার কু-নজর পরে। পরবর্তীতে তিনি আমাদের জমিও ক্রয় করার প্রস্তাব দিলে আমরা জমি বিক্রয় করতে অসম্মতি জানাই। যে কারণে এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার আওয়ামী স্বৈরশাসনামলে সাংসদ থাকাকালীন ক্ষমতার দাপট দেখিয়া আমি ওসমান গনিসহ আমার অপর তিন ভাইয়ের অংশের সাড়ে ২৩ শতাংশ জমি অবৈধভাবে জবর দখলে নিয়া যায়। আমরা শতবার চেষ্টা করেও আমাদের জমি উদ্ধার করতে পারিনি। আমরা আমাদের জমি উদ্ধারের চেষ্টা করলে বিবাদী তার ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আমাদেরকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানি করেছে। এমনকি আমাকে ও আমাদের পরিবারকে চিরতরে শেষ করে ফেলার ষড়যন্ত্র করে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল-হাজত খাটিয়েছে। অশেষে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর তিনি লাপাত্তা হয়ে যায়। ভূমি খেকো এই প্রভাবশালী ব্যক্তির অবৈধ দখলে থাকা আমাদের জমি উদ্ধারে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

আরেক ভুক্তভোগী মো. সোবহান শেখ বলেন, রুহুল আমিন হাওলাদার সাংসদ ও মন্ত্রী থাকাকালীন কুয়াকাটায় একাধিক জমি দখল করে নিয়ে গেছে। যারাই এর প্রতিবাদ করেছে তারাই মামলা-হামলার স্বীকার হয়েছে। তার অত্যাচারে এলাকার অনেক মানুষ নিঃস্ব হয়ে গেছে। আমরাও নিঃস্ব হয়ে গেছি।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি কারো জমি জবর দখল করিনি। উল্টো ওসমান শেখ আমার কাছে বায়না চুক্তির মাধ্যমে জমি বিক্রি করেছে। তিনি জমির টাকাও নিয়েছে। কাগজপত্রে তার মালিকানা সঠিক না থাকায় তিনি জমির দলিল না দিতে পেরে নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নেন। যার প্রেক্ষিতে আমি মামলা করতে বাধ্য হয়েছি। ওই জমি নিয়ে সরকারের সাথে মামলা চলমান রয়েছে। সাবেক মন্ত্রী রুহুল আমিন হাওলাদার দাবি করেন, তার বায়না চুক্তির জমিতে ওসমান শেখ নিয়মবহির্ভূতভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ করেছে।

তিনি আরো বলেন, ওসমান শেখ ছাড়া অন্য ওয়ারিশরা তার কাছে সাব কবলা দলিল মূলে বিক্রি করেছে। এখন তারাও বলছে আমরা দলিল দেইনি। যা সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। আপনারা কাগজপত্র পর্যালোচনা করলে যার সত্যতা বেড়িয়ে আসবে।

- Advertisment -

সর্বশেষ সংবাদ