মাহমুদুল হাসান টাংগাইল জেলা প্রতিনিধি : শুকনো মৌসুমে টাঙ্গাইলের সদর উপজেলায় যমুনা নদীতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে কমপক্ষে ১৫টি ঘর-বাড়ি যমুনার নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এতে ভাঙন আতঙ্ক রয়েছে নদী পাড়ের আরও কমপক্ষে দেড় শতাধিক পরিবার। ভাঙনের আশঙ্কায় অনেকে ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়াসহ আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন। ফলে এই পরিবারগুলো নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, গত ৫ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল থেকে যমুনা নদী তীরবর্তী চরপৌলী গ্রামে দশখাদা এলাকায় তীব্র ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনে ইতোমধ্যে ১৫টি ঘর-বাড়ি যমুনার পেটে চলে যায়। দ্রুত ভাঙনরোধে পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে চরপৌলী গ্রামের দেড় শতাধিক পরিবারের ঘর-বাড়ি যমুনাগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। ইতোমধ্যে ভাঙন আতঙ্কে অনেকে ঘর-বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। তারা অতিদ্রুত শুষ্ক মৌসুমের ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত চরপৌলীর দশখাদা এলাকার শফিকুল ইসলাম জানান, তারা দিনমজরী করে দিনাতিপাত করেন। এক সময় জমি-জমা, অর্থ-সম্পদ সবই ছিল। রাক্ষুসী যমুনা সব কেড়ে নিয়েছে। তারা দুজনেই এনিয়ে ৪ বারের বেশি নদী ভাঙনের শিকার হয়েছেন। এবারের ভাঙনে তারা পথে বসে পড়েছে। সরকারি সহযোগিতা না পেলে তারা আরও বিপাকে পড়বেন।
একই এলাকার বাসিন্দা মো. জুরান খাঁ ও রহিজ উদ্দিন জানান- ইতোপূর্বে কয়েক দফায় তাদের ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। অল্পকিছুদিন আগে তাদের এলাকার আড়াই শতাধিক ঘর-বাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। গত মঙ্গলবার নতুন করে আরও ১৫টি পরিবারের ঘর-বাড়ি বিলীন হয়। ভাঙনরোধে সংশ্লিষ্টদের কাছে অতিদ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
কাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, গত মঙ্গলবার সকাল থেকে অসময়ে হঠাৎ যমুনা তীরে ভাঙন শুরু হয়। এতে ১৫ পরিবার ঘর-বাড়ি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো। সব মিলিয়ে প্রায় ৭০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা না করা হলে তাদের খোলা আকাশের নিচে অথবা অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হবে।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান জানান, যমুনা নদী সব সময়ই আগ্রাসী। ওই এলাকায় নদী ভাঙনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ভাঙনরোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।