31 C
Dhaka
শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪

দুটি টমটম গাড়ির সংঘর্ষে আহত, গলাচিপায় বাঁচার আকুতি জানিয়েছে চায়ের দোকানদার

তারিখঃ ১৪ অক্টোবর ২০২৪

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর গলাচিপায় বাঁচার আকুতি জানিয়েছে দুটি টমটম গাড়ির সংঘর্ষে আহত চায়ের দোকানদার মো. আবুল কালাম হাওলাদার। তার অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌছিয়েছে যে, তিনি সংসারের জন্য কোন আয় তো করতে পারছেন না উল্টো তার চিকিৎসা খরচ চালাতে না পেরে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হবে তাকে।
তাই তো আবুল কালাম হাওলাদার (৫৩) বাঁচার জন্য আকুতি জানিয়েছেন।
মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না ও বন্ধুৃ; বিখ্যাত গানটি ভূপেন হাজারিকার। আর সেই সহানুভূতিই পেতে চান উপজেলার গলাচিপা সদর ইউনিয়নের উত্তর বোয়ালিয়া গ্রামের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত. শরিব আলী হাওলাদারের ছেলে আবুল কালাম হাওলাদার। তার পরিবারে ৬ জন সদস্য। কোন ছেলে সন্তান নাই। ফলে তিনিই পরাবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। আর সেই আয়ের পথ কেড়ে নিল একটি দুর্ঘটনা। আর সেই দুর্ঘটনার শিকার হয়ে প্রায় পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে আবুল কালাম হাওলাদারকে। আবুল কালাম হাওলাদার শ্রীনাথ বাজারে একটি চায়ের দোকান দিতেন। তিনি শ্রীনাথ বাজার থেকে দোকান বন্ধ করে বাড়ি যাওয়ার পথে তাকে বহনকারী টমটম গাড়িটিকে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি টমটম ধাক্কা দিলে আবুল কালাম হাওলাদার গুরুতর আহত হয়। এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা গুরুতর দেখে তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করেন। তাকে তার পরিবারের সদস্যরা ১৫ দিন ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা চালিয়ে ২ লক্ষ ২৫ হাজার ৭ শত ৯৪ টাকা খরচের পর আর্থিক সংকটে তাকে আবার বাড়িতে নিয়ে আসেন। কিন্তু তার এখন উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। নতুবা শীঘ্রই তার ডান হাত ও ডান পা কেটে ফেলতে হতে পারে। এতে চিরদিনের জন্য পঙ্গু হয়ে যাবেন আবুল কালাম হাওলাদার। আর এর সাথে সাথে তার পরিবারের উপার্জনের রাস্তাটিও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ বিষয়ে আবুল কালাম হাওলাদার জানান, আমি শ্রীনাথ বাজারে সুনামের সহিত ছোট একটি চায়ের দোকান করে কোন মতে সংসার চালিয়ে আসছি। আমার ১ম স্ত্রী সেলিনা বেগমের ঔরষে ৩টি কন্যা সন্তান হয়।

পরে ছেলে সন্তানের আশায় ১ম স্ত্রীর কথামত মমতাজ বেগমকে ২য় বিবাহ করি। কিন্তু এই ঘরেও আল্লাহ কোন পুত্র সন্তান দেয় নাই। টমটম দুর্ঘটনায় আমার ডান হাত ও ডান পা ভেঙ্গে যায়। মানুষের কাছ থেকে ধার দেনা করে আমার দুই স্ত্রী ১৫ দিনে প্রায় ২ লক্ষ টাকার উপরে খরচ করে আমার চিকিৎসা চালায়। কিন্তু টাকার অভাবে আমি এখন বাড়িতে আছি। চিকিৎসার অভাবে আমার হাত ও পায়ে পচন শুরু হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আমার পুরো শরীরেই পচন ধরতে পারে।

এই কথা বলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পরে তিনি সমাজের বিত্তবান লোক সহ দেশের সকলের কাছে একটু বেঁচে থাকার আশায় আর্থিক সাহায্য কামনা করেন। তার বিকাশ নম্বর- ০১৭৪২১৫৫৮৩৬, নগদ নম্বর- ০১৭৩৯৫৩৫৫৫৭। এ বিষয়ে তার ১ম স্ত্রী সেলিনা বেগম বলেন, আমরা গরিব মানুষ। আমাদের সংসারে এখন দুরাবস্থা চলছে। আমার স্বামীর চিকিৎসা চালাতে গিয়ে আমরা পথে বসে গেছি। আপনারা আমার স্বামীকে আর্থিক সহযোগিতা করে তার জীবনটাকে ফিরিয়ে দেন বলে তিনিও কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এ বিষয়ে ২য় স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন, আমরা খুব শান্তিতেই বসবাস করছিলাম। সুচিকিৎসার অভাবে আমার স্বামী দিনদিন মৃত্যুর প্রহর গুণছেন। আপনারা আমার স্বামীকে বাঁচান।
তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন। এত টাকা এখন আমরা কোথায় পাব? তাই আপনাদের সকলের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চাই। এ বিষয়ে গলাচিপা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন টুটু বলেন, আসলেই পরিবারটি অসহায়। গরিব মানুষ। সকলে মিলে আর্থিক সহযোগিতা করলে পরিবারটি আবার বাঁচতে পারে।

- Advertisment -

সর্বশেষ সংবাদ