উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ একটি স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন। ২০১৬ সাল থেকে এই ফাউন্ডেশন কাজ করছে দেশ ও মানুষের সেবায়। উৎসব ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ মূলত স্বাস্থ্য পরিবেশ বিষয় নিয়ে কাজ করে থাকলেও দেশের বিভিন্ন দুর্যোগে জরুরি প্রতিক্রিয়া কার্যক্রম উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য একটি নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ।
২০২৪ এ দেশের দক্ষিণ পূর্বাঅঞ্চলের বন্যায় উৎসর্গ ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন ইউনিটের স্বেচ্ছাসেবকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বন্যা পরিস্থিতিতে ফাউন্ডেশনটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাথে যৌথভাবে কুমিল্লার বুড়িচংয়ে রেসকিউ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। পাশাপাশি কুমিল্লার বুড়িচংয়ের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে বন্যার পানিতে আটকে থাকা মানুষকে জরুরি শুকনো খাবার বিতরণ ও জরুরি ঔষধ সরবরাহ করেছে। বন্যা পরিস্থিতিতে উৎসর্গের কার্যক্রমকে ৩টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে ফাউন্ডেশনটির পক্ষ থেকে। প্রথমত রেসকিউ কার্যক্রম, দ্বিতীয় জরুরী শুকনা খাবার ও ঔষধ সরবরাহ কার্যক্রম এবং পরবর্তীতে পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে চাল, ডাল, আলু, লবণ, তেল, মোমবাতি, গ্যাস লাইট, ওরস্যালাইন সড় বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করা। কুমিল্লার বুড়িচংয়ে বিভিন্ন গ্রামে উৎসর্গ ৫০০ মানুষের কাছে শুকনা খাবার ও ভারী খাবার সরবরাহ করেছে ২টি ধাপে।
পরবর্তীতে নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের বন্যা পরিস্থিতির অবনতির সাথে সাথে একইভাবে উৎসর্গ ফাউন্ডেশন এই ২ টি জেলায় কাজ করেছে। প্রথমে নোয়াখালী ও লক্ষীপুর ইউনিটের স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে এলাকাবাসীকে আশ্রয় কেন্দ্রে স্থানান্তর স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে করেছে। লক্ষীপুরের কমলনগর একটি আশ্রয় কেন্দ্রে ৩৫০ জনের জন্য রান্না খাবার বিতরণ করেছে ও নোয়াখালীর সেনবাগ, মাইজদী, বেগমগঞ্জে প্রায় ১০০০ মানুষকে শুকনা খাবারের পাশাপাশি ভারী খাবার ও ঔষধ, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও স্যানিটারি ন্যাপকিন সরবরাহ করেছে।
বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি এবং পরিকল্পনা নিয়ে
উৎসর্গ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শেখ শাহরিয়ার পান্না বলেন, বন্যা পরবর্তী সময়ে বন্যা দুর্গত মানুষের জন্য আমাদের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চলমান থাকবে পাশাপাশি আমরা পরিকল্পনা করছি স্থায়ী কিছু সহযোগিতা দিয়ে মানুষের পাশে থাকতে। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে কিছু নিরাপদ খাবার পানির উৎস স্থাপন, স্বাস্থ্য সম্মত ল্যাটিন স্থাপন সহ যাদের গৃহপালিত পশু পাখির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাদের জন্য গৃহপালিত পশু পাখির ব্যবস্থা করা যাতে করে তারা আবার নতুন ভাবে তাদের জীবনকে সাজাতে পারে।
উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ একটি অরাজনৈতিক, অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন। ফাউন্ডেশনটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জনাব ইমরুল কায়েস উৎসর্গের পক্ষ থেকে সকল ইউনিটের স্বেচ্ছাসেবক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও দেশবাসীকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এই দূর্যোগে উৎসর্গ কে আর্থিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে পাশে থাকার জন্য।
উল্লেখ্য, এই বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক সহযোগিতা যেমন সাধারণ মানুষ করেছেন তেমনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন চিত্রশিল্পী জনাব নাজমুস ছাকিম তার চিত্রকর্ম উৎসর্গের হাতে তুলে দেন এবং উৎসর্গের মাধ্যমে নিলামে বিক্রি করে চিত্রকর্ম বিক্রির সম্পূর্ণ অর্থ বন্যার্তদের মাঝে দিয়ে সহযোগিতা করেন।