মাদারীপুর প্রতিনিধি
মাদারীপুরে পল্লী বিদ্যুতের অবৈধ সাইডলাইনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পিতা ও পুত্রের মৃত্যু হয়েছে। তরিঘড়ি করে ময়না তদন্ত ছাড়াই পিতা পুত্রের মরদেহ দাফন করা হয়। রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ী ইউনিয়নের হিজলবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।নিহতরা হলো পুন্য পান্ডে (৫০) ও পুত্র রিচার্ড পান্ডে(১৪)। এ ঘটনার পরে গ্রাম্য শালিশে মাধ্যমে ১০লাখ ৫০হাজার টাকায় মিমাংসা করা হয়। কিন্তু মিমাংসার টাকা ভুক্তভোগী পরিবার হাতে না পাওয়ায় গতকালবুধবার(২৮-৮-২৪)রাতে এলাকায় জানাযানি হয়। এ ঘটনা এলাকায় জানাযানি হলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্ট হয়। এলাকাবাসী জানায়, গত সোমবার(২৬-০৮-২৪) বিকেলে রাজৈর উপজেলার হিজলবাড়ী গ্রামের মৃত মোহন পান্ডের পল্লী বিদ্যুতের লাইন ও মিটার সংযোগকৃত পরিত্যাক্ত ঘর থেকে একশত গজ দুরে দিলীপ হালদার সাইডলাইন নেয় তার মাছের ঘের ও মুরগীর খামারে। এখান থেকে আবার পংকজ বারুরী প্রায় ৫০গজ দুরে এক তারের মাধ্যমে সাইডলাইন নেয় তার ঘের ও মুরগী খামারে। এ দুই খামারের মাঝখানে মৃত পুন্য পান্ডে ঘের অবস্থিত। আর ঘেরের উপর দিয়ে ওই দুই খামারে অবৈধভাবে সাইড লাইন নেয়া হয়। গত সোমবার (২৬-৮-২৪) বিকালে পুন্য পান্ডে নিজ ঘেরে বড়শী দিয়ে মাছ ধরতে যায়। বড়শীতে মাছ ধরা পড়লে মাছ তুলতে জোরে টান দিলে বড়শী উপরের বৈদ্যুতিক তারে গিয়ে বিধে যায় । এসময় বৈদ্যুতিক তার থেকে বড়শী খুলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। বাবার বাড়ীতে আসতে দেরী হওয়ায় ছোট ছেলে রিচার্ড পিতাকে খুজতে খামারে এসে দেখে পিতা পুন্য পান্ডে পানিতে উপুর পড়ে আছে। এসময় বাবাকে তুলতে গেলে সেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পড়ে । কিছুক্ষন পরে বড় ছেলে ওই দুইজনকে খুজতে আসে । এবং তাদের কে তুলতে গেলে সেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছিটকে পড়ে প্রানে রক্ষা পায় । মুমুর্ষ রিচার্ডকে উদ্ধার করে নিকটতম কদমবাড়ী বাজারে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার সময় তার মৃত্যু ঘটে। পরক্ষনে ময়না তদন্ত ছাড়াই তরিঘড়ি করে মরদেহ কবর দেওয়া হয়। পরে মঙ্গলবার(২৭-৮-২৪) বিকালে অনিল বৈদ্যের সভাপতিত্বে এক শালিশ বৈঠকে ওই দুই খামার মালিক পংকজ বারুরীকে আট লক্ষ ও দিলীপ হালদারকে আড়াই লক্ষ টাকা জরিমানা করে আপোস মিমাংসা করা হয়। এ বৈঠকে সুকন্ঠ গাইন, বাবলু বৈদ্য, সুকান্ত হালদার, মনোজ বারুরী ও সমীর বারুরীসহ শতাধিক লোক উপস্থিত ছিলেন।অভিযুক্ত পংকজ বারুরী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ওই পরিবারটিকে সহযোগিতা করার জন্য শালিশদের রায় মেনে নিয়ে ধার্যকৃত টাকার মধ্যে চার লক্ষ টাকা পরিশোধ করেছি। মাদারীপুর পল্লীবিদ্যুৎ টেকেরহাট জোনাল অফিসের ডিজিএম মাহামুদুল হাসান জানান, এব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না। এবাপারে রাজৈর থানা অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) আসাদুজ্জামান হাওলাদার জানান, ঘটনা জেনেছি। পরিবারের দাবীর মুখে ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি দেয়া হয়।