31 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৪

দক্ষিণ আইচা থানার বকশি’র বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

চরফ্যাশন প্রতিনিধি।
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানার বকশি মাহাবুব আলমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। টাকার বিনিময়ে থানার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁস ও সকল মামলা রেকর্ডেই ঘুষ গ্রহণের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সে থানা’র ওসি সহ দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের নাম ভাঙ্গিয়েও দীর্ঘদিন যাবৎ ঘুষ গ্রহণ করে আসছে। তাকে ঘুষ না দিলে নিজের শারিরিক অসুস্থ্যতা,ব্যস্ততা ও এজাহারের কপিতে ত্রুটিসহ নানা অযুহাত দেখিয়ে বাদি পক্ষকে হয়রানি করেন তিনি। বকশি মাহাবুব আলমের বিরুদ্ধে এসকল অভিযোগ (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানা’র বিভিন্ন সচেতন মহল ও ভুক্তভোগিদের। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে,বরিশাল জেলার উজিরপুর থানার বাসিন্দা তিনি। তার কনস্টেবল নাম্বার-৮৫০৪১৯৪৭২১। ৫ বছর ধরে সে দক্ষিণ আইচা থানায় কর্মরত আছেন। শুরু থেকেই তিনি দক্ষিণ আইচা থানার বকশির দায়িত্ব গ্রহন করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে,বকশি প্রত্যেক মামলায় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা এবং ওসি সহ বিভিন্ন অফিসারদের নাম ভাঙ্গিয়ে মোটা অঙ্কের ঘুষ দাবি ও গ্রহণ করে আসছেন। দীর্ঘদিন ধরে নিরীহ ও পয়সাওয়ালাদের কাছ থেকে আরও বেশি ঘুষ গ্রহণ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও যে কোন ব্যক্তি মামলা দায়ের বা অভিযোগের কপি নিয়ে থানায় এলেই কপির নাম দেখে আসামি পক্ষের লোকজনের মোবাইল নাম্বার দালালদের মাধ্যমে সংগ্রহ করে বিষয়টি তাদের জানিয়ে দেয়। এ বাবদ আসামী পক্ষের কাছ থেকে সে টাকা হাতিয়ে নেয়।
বিকাশে বা লোকমারফত ঘুষ গ্রহণ করে মামলার অনেক গুরুত্বপূর্ণ গোপন তথ্য আসামী পক্ষকে জানিয়ে দেন তিনি। এছাড়াও পুলিশ আসামী ধরতে যাওয়ার আগ মুহুর্তে মোবাইলের মাধ্যমে তিনি আসামী পক্ষকে সতর্ক করে দেন। এতে করে পুলিশ অনেক দাগী আসামীকে ধরতে ব্যর্থ হচ্ছে। যে কোন মামলার ফাইল মামলা রুজু হওয়ার আগে নিয়মানুযায়ী বকশি প্রস্তুত করে ওসির কাছে নিয়ে থাকে।
কিন্তুু এ সুযোগে বকশি মাহবুব আলম নিজে ওসির নাম ভাঙ্গিয়ে মোটা অংকের ঘুষ গ্রহণ করে আসছে। বাদি পক্ষের সকল তথ্য আসামি পক্ষের কাছে বিক্রির জন্য এজাহারের একাধিক কপি করে রাখেন এবং সেই কপি ১হাজার থেকে,১৫০০শ,
টাকায় বিক্রি করে থাকেন। এদিকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর জন্য ওসির নাম ভাঙ্গিয়ে ১০ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা দাবী করেন, সর্বনিম্ন ৭ হাজার টাকার কমে তিনি গ্রহণ করেন না। অনেকের অভিযোগ বা জিডি থানায় লিপিবদ্ধ হওয়ার আগেই সেসব তথ্য প্রতিপক্ষের কাছে বকশি ফাঁস করে দেয়।

যে কারনে আইনী সহায়তা নিতে আসা অনেক সাধারণ মানুষ বিভিন্ন হুমকি-ধামকি ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এছাড়াও প্রতিনিয়তই থানায় গ্রেফতারকৃত আসামীদের কোর্টে চালানের জন্য গাড়ী ভাড়া বাবদ আসামী প্রতি ১ হাজার টাকা করে দাবী করেন তিনি। টাকা কম দিলে ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি করে আসামীদেরকে কোর্টে পাঠান। এমন অভিযোগ আসামী পক্ষের স্বনজদের। তথ্য অনুসন্ধানে আরো জানা যায়,থানায় জব্দকৃত বিভিন্ন প্রকার মাদক দ্রব্য ও ঢাল,ফালা, রামদা এবং দেশীয় তৈরী অস্ত্র-শস্ত্র তিনি গোপনে বিক্রয় করেন। অনেক মাদক ব্যবসায়ীর সাথে তার সখ্যতা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রতি ঈদ ও বিশেষ দিনকে সামনে রেখে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নাম ভাঙ্গিয়ে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করেন বকশি মাহবুব আলম।
সচেতন মহলের দাবী পুলিশ কনস্টেবল ১ বছরের বেশি একটি থানায় থাকার নিয়ম না থাকলেও বকশি মাহবুব আলম অত্যান্ত সু-কৌশলে ডিও বাড়িয়ে এই থানায় ৩ বছর রয়েছেন। তিনি কি মধু পেয়েছেন দক্ষিণ আইচা থানায় ? এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মনে। দক্ষিণ আইচা এলাকাবাসী ক্ষুদ্ধমনে বলেছেন তার এসকল অপকর্ম ও লাগামহীন দূর্নীতির কারনে পুলিশ প্রশাসনের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে।
এদিকে অভিযুক্ত দক্ষিণ আইচা থানার বকশি মাহবুব আলম সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করিলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অভিযুক্ত বকশি মাহাবুব আলমের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আইচা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি সাঈদ আহম্মেদ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি ছুটিতে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। থানার বকশি দূর্নীতিবাজ বকশি মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগিরা।

- Advertisment -

সর্বশেষ সংবাদ