31 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০২৪

নাইক্ষ্যংছড়ি হাজী এম এ কালাম সরকারি কলেজ থেকে কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেলেন

বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি: শান্ত তঞ্চঙ্গ্যা

শিক্ষা জীবনে প্রায় প্রতিটি শিক্ষার্থীর মনেই স্বপ্ন জাগে একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাদ গ্রহণের। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের সময় থেকেই রঙিন স্বপ্নকে মনের মধ্যে লালিত করতে থাকে তারা। তবে বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক কারণে সেই স্বাদ গ্রহণের সুযোগ হয়না সবার। অনেকে আবার কঠোর পরিশ্রম করেও ভাগ্যের পরিহাসে স্বপ্নের ক্যাম্পাসে পদচারণা করতে পারে না। তবে তাদের মধ্যে যারা একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের খাতায় নাম লেখাতে পারে নিঃসন্দেহে তাদের ভাগ্যবান বলা চলে৷ এই বছর ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেলেন, থোয়াইঅংসিং মার্মা, পিতা: চসুইথোয়াই মার্মা, মাতা: হাংম্রাউ মার্মা। বড় ভাই এবং ছোট দুইভাইদের নিয়ে বান্দরবান জেলা লামা উপজেলায় শিলেরতুয়া মার্মা গ্রামে বসবাস করেন । ৪র্থ পর্যায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে Fine Art ডিপার্টমেন্টে মনোনীত হয়েছেন।

স্বপ্ন যখন বাস্তব রুপে
এমন শিক্ষার্থী দুষ্প্রাপ্য যে চায় না পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে! আমিও তার ব্যতিক্রম নই, কলেজে যাওয়া আসার পথে যখন দেখতাম দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর লাল, সাদা বাস গুলো যাচ্ছে তখন খুব করে নিজের মধ্যে একটা সংকল্প তৈরী করি যে না আমাকে এই বাসে চড়তে হবে, আমাকেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হবে! তখনকার বুনা স্বপ্ন আজ বাস্তব রুপে আমার দারপ্রান্তে! আজ আমি! আমি শুনতে পাই এটি আবেগের উৎফুল্লের, উৎকন্ঠার এবং গৌরবের যা তুৃমি অর্জন করেছো যা তুমি ছুঁতে পেরেছো।

বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোনীত হওয়ার পিছনে তারা ছোট গল্প ।
বান্দরবান জেলা, লামা উপজেলা আলীকদম আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্র হিসেবে ছিলেন। ছোট থাকতে বিশ্ববিদ্যালয় কি? সে নিজেও জানত না। অষ্টম শ্রেণীতে পড়াকালীন কোন এক টুকরোর সময়ের ফাঁকে এক শিক্ষক কাছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বর্ণনা শুনেছিলেন , সে সম্মানিত শিক্ষক হলেন,নির্মল কান্তি চাকমা বিশ্ববিদ্যালয় সম্বন্ধে জানিয়েছিলেন। তখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আকর্ষিত ছিলাম। এছাড়াও অনান্য শিক্ষক-শিক্ষিকারাও বিশ্ববিদ্যালয় সম্বন্ধে অনেক উৎসাহ দিতেন। ২০২০ সালে এসএসসি পরীক্ষা অংশগ্রহণ করি জিপিএ-৩.৭২ উত্তীর্ণ হয়। এরপর একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হই নাইক্ষ্যংছড়ি হাজী এম এ কালাম সরকারি কলেজে। আমার কলেজ জীবনে প্রথম দিনেই বন্ধু-বান্ধবদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্কে আলোচনা করেছিলাম। বন্ধু-বান্ধবরা কলেজে অধ্যয়ন নিয়ে বিভিন্ন ইতিবাচক কথা তুলে ধরে। তবুও আমি জেদ ধরে লেখাপড়া চালিয়ে গিয়েছিলাম। সময় দিনক্ষণে পড়িয়া এলো ২০২২সালে এইচএসসি পরীক্ষার অংশগ্রহণ করে ব্যবসার বিভাগ থেকে জিপিএ-৩.৬৭ উত্তীর্ণ হয়। এরপর থেকে গ্রামের এক দাদা উৎসাহ এবং আপন দাদা সহযোগিতায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের BMSC University Admission Coaching Program-এ ফ্রি কোচিং করেছিলাম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত বড় ভাইবোনেরা ২ বছর যাবৎ ফ্রি কোচিং করিয়ে ছিলেন। আর আমি ৩তম বছরে ফ্রী কোচিং পড়োয়ার ছাত্র ছিলাম। অনেক দাদা ও বোনের মানসিক উৎসাহ এবং ব্যক্তিগত পড়ালেখা চালিয়ে গিয়েছিলাম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় ভাই-বোনেরা নিজের আপন ছোট-ভাই মতো করে পড়ায়। শুধু কোচিং নয়, পরীক্ষা দেওয়ার আগ পর্যন্ত ওনারা আমার পাশে ছিলেন। অতঃপর কোনোমতে, গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা পাশ করেছিলাম (পাসমার্ক-৩৭.৫০)। অতঃপর অপেক্ষা করতে করতে ৪র্থ পর্যায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে Fine Art ডিপার্টমেন্টে মনোনীত হয়েছি। একদা সহযোগিতায় Fine Art ডিপার্টমেন্টে প্রাকটিক্যাল পরীক্ষায় পাস করেছিলাম। তাই আমি ,আজ কোনো এক কোণ থেকে হাত জোড় করে মাথানত হয়ে মা-বাবা, আপন দাদা, BMSC কোচিং-এর বড় ভাইবোন, উৎসাহ দেওয়ার শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং মানসিক শান্তি দেওয়ার বন্ধু বান্ধবদের ধন্যবাদ জানাই।

- Advertisment -

সর্বশেষ সংবাদ