31 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০২৪

বান্দরবান থেকে দুই খুমী‌ আদিবাসী শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি

বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি: শান্ত তঞ্চঙ্গ্যা

তাদের একজন নেবাই এঅং খুমী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগে এবং অপরজন লিংকু খুমী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে ভর্তি হয়েছেন।

নেবাই খুমী রুমা উপজেলার খোলাইন পাড়ার এবং লিংকু খুমী একই উপজেলার রেমাক্রিপ্রাংসা ইউনিয়নের রুংতন পাড়ার বাসিন্দা।
নেবাই রুমার তিনি ছোটবেলা থেকেই পরিবারের সঙ্গে বান্দরবান শহরে বসবাস করে আসছেন।
লিংকু খুমী রুমা বগা লেকের পাশে বাস করা দরিদ্র এক জমুচাষি পরিবারে সন্তান।
রুমা উপজাতীয় আবাসিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং বান্দরবান শহরে কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।

নেবাই বলেন, আমার মা-বাবার জুম চাষ করে, যতটুকু সামর্থ্য হয়েছে ততটুকু আমার মা-বাবা আমাকে লেখাপড়া করিয়েছে। আমি আমার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদানের পিছনে আমার মা বাবাই সবচেয়ে অবদান।
বাবা মা জুম চাষী ছিলেন, তার পাশাপাশি দিনমজুরও ছিলেন। এভাবে বেড়ে উঠেছি আমি জমি চাষি পরিবার থেকে। আমি চাই আমার খুমি জাতি আরো এগিয়ে যাক।

পার্বত্য চট্টগ্রামে খুমীরা জনসংখ্যা ও শিক্ষার হার একেবারেই কম বললে চলে। বান্দরবানেও মাত্র তিনটি উপজেলায় গহিন পাহাড়ে বসবাস করেন খুমীরা। দুর্গম পরিবেশে থেকে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া খুবই ভাগ্যের ব্যাপার। যে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে বিষয়ে পড়ুক লেখা-পড়ায় ভালো হতে হবে। কারণ, সংখ্যায় কম কিংবা বেশি হোক, বর্তমানে প্রতিযোগিতা করেই টিকে থাকতে হয়।

বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবারত বিভিন্ন পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে অবহেলিত ও বঞ্চিত হচ্ছে খুমীরা।২০১৪ খ্রিস্টাব্দে দ্যা সোসাইটি ফর এনভারনমেন্ট এন্ড হিউম্যান ডেভেলাপমেন্ট (সেড) একটি বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত খুমীদের আর্থ-সামাজিক জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে খুমীদের সংখ্যা ২,৮৯৯জন।খুমীরা মূলত পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান পার্বত্য জেলার থানছি, রুমা এবং রোয়াংছড়ি উপজেলায় বসবাস করে।

সেডের এই জরিপের তথ্যনুযায়ী থানছি উপজেলায় ২৩টি, রুমা উপজেলায় ১৩টি রোয়াং ছড়িতে ৫টি এবং রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার ১টি পাড়ায় ১০টি পরিবার বসবাস করে। এখানে মোট ৪৮৭টি খুমী পরিবার রয়েছে। খুমী মোট জনসংখ্যার শতকরা ৫১.২২ ভাগ পুরুষ এবং ৪৮.৭৮ ভাগ নারী।

তাদের সাক্ষরতার হার শতকরা ২৮.২০ ভাগ বাকি ৭১.৮০ ভাগ নিরক্ষর। তারা প্রায় সবাই কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে যা স্থানীয় ভাবে ‘জুম চাষ’ নামে অধিক পরিচিত। তারা শিক্ষা-দীক্ষায় ও আর্থ-সামাজিক দিক থেকে অত্যন্ত প্রান্তিক।

- Advertisment -

সর্বশেষ সংবাদ