31 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০২৪

প্রশংসায় ভাসছে বিশ্ব জয়ী হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম

দুবাই আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশর হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বাংলাদেশের সময় রাত সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম স্থান অধিকারী হিসেবে তাকরিমের নাম ঘোষণা করা হয়।

তাকরিমের ১ম স্থান অর্জন করার বিষয়টি ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন মারকাযু ফয়জিল কোরআনের শিক্ষক হাফেজ আব্দুল্লাহ আল মামুন। এরপর থেকেই হাফেজ তাকরিমকে নিয়ে নেটিজনরা প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন। সবাই তার মঙ্গল কামনা করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। কেউ কেউ তাঁকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মাননা দেওয়ারও দাবি জানান।

জানা যায়, গত ২৪ মার্চ থেকে শুরু হয় দুবাই আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতার ২৬তম পর্ব। এই প্রতিযোগিতায় ২য় স্থান লাভ করে ইথিওপিয়ার আব্বাস হাদি উমর ও ৩য় স্থান লাভ করে সৌদি আরবের খালিদ সুলাইমান সালিহ আল-বারকানি। যৌথভাবে ৪র্থ স্থান লাভ ক্যামেরুনের নুরুদ্দিন ও ইন্দোনেশিয়ার ফাতওয়া হাদিস মাওলানা এবং ৬ষ্ঠ স্থান লাভ করে কেনিয়ার আবদুল আলিম আবদুর রহিম মুহাম্মদ হাজি। যৌথভাবে ৭ম স্থান লাভ করে সিরিয়ার মুহাম্মদ হাজ আসআদ ও ইয়েমেনের মুহাম্মদ আবদুহু আহমদ কাসিম। যৌথভাবে ৯ম স্থান লাভ করে ব্রুনাইয়ের আবদুল আজিজ বিন নুর নাসরান ও মরক্কোর হামজা মুসতাকিম।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খ্যাতিমান কোরআন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ আন্তর্জাতিক এই প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে ছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন বাংলাদেশের শায়খ শুয়াইব মুজিবুল হক, সৌদি আরবের ড. আহমদ বিন হামুদ, আমিরাতের ড. সালিম আল-দাওবি, মরক্কোর শায়খ আবদুল্লাহ আইশ, মিসরের জামাল ফারুক, পাকিস্তানের ড. আহমদ মিয়া থানভিসহ আরো অনেকে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত বছর মার্চে ইরানে অনুষ্ঠিত কোরআন প্রতিযোগিতায় ১ম এবং সেপ্টেম্বরে মক্কায় অনুষ্ঠিত কোরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অধিকার করে তাকরিম। সালেহ আহমদ তাকরিম ঢাকার মারকাযু ফয়জিল কোরআন আল ইসলামী মাদরাসার কিতাব বিভাগের শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানার ভাদ্রা গ্রামে। তাঁর বাবা হাফেজ আব্দুর রহমান মাদরাসার শিক্ষক।

এম সি মামুন নামে একজন লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ। হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম ২০২৩ সালে আবারও দুবাই আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অধিকার করেছে। অভিনন্দন ও ভালোবাসা তোমার জন্য তাকরিম।

সায়মন শাহাদাত নামে একজন লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ! হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম ২০২৩ সালে আবারও দুবাই আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অধিকার করায় আমরা আনন্দিত ও গর্বিত।

শোয়াইব আকতার নামে একজন লিখেছেন, হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম ২০২৩ সালে আবারও দুবাই আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে। এদেশ ধন্য তোমার জন্য।

তারেক সালমান নামে একজন লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ! আবারও বিশ্ব জয় করলো হাফেজ তাকরিম। দুবাইতে আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অর্জন করলো টাঙ্গাইলের গর্ব হাফেজ সালেহ আহমদ তাকরিম।

ইয়াশ উদ্দিন নামে একজন লিখেছেন, মাশাআল্লাহ, অনেক দূর এগিয়ে যাও হাফেজ তাকরিম। দোয়া করি মহান আল্লাহ তোমাকে হেফাজত করুক।

মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন নামে একজন লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ। আবারও হাফেজ তাকরিমের বিশ্বজয়। এবার দুবাই আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে দেশের মুখ উজ্জ্বল করলো ছোট্ট হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম। অভিনন্দন, দোয়া ও শুভ কামনা রইল তোমার জন্য। মহান আল্লাহ তোমাকে তাঁর দ্বীনের জন্য পরিপূর্ণরূপে কবুল করুন। তোমরাই তো আমাদের প্রকৃত গর্ব, আসল চ্যাম্পিয়ন।

পলাশ মাহমুদ নামে একজন লিখেছেন, অভিনন্দন। বাংলাদেশের সেই কিশোর হাফেজ তাকরিম এবার দুবাইয়ে কোরআন প্রতিযোগিতায় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে।

শাহরিয়ার পলাশ নামে একজন লিখেছেন, আবারও বিশ্বসেরা হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম। অভিনন্দন তাকরিম।

মো. আবুল কালাম আজাদ নামে একজন লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ! আবারও হাফেজ তাকরিমের বিশ্বজয়। দুবাই আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে হাফেজ তাকরিম। মহান রাব্বুল আলামিন তোমাকে নেক হায়াত ও সুস্থতার সাথে দীর্ঘজীবি করুন-আমিন।

প্রখ্যাত আলেম মাওলানা ডা. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী নামে একজন লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ! ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ! দুবাই আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অর্জনকারী হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরিমকে মোবারকবাদ। শুভ কামনা রইল মারকাযু ফয়জিল কোরআন ইসলামী ও তার শিক্ষকদের জন্য।

তিনি আরও লিখেছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুবাই আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতাতে বাংলাদেশের এক ফুটন্ত গোলাপ হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরিম ১ম স্থান অর্জন করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। এদেশের মানুষের হৃদয়ে আশার সঞ্চার করেছে এবং সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশ যে বিশ্বের ২য় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র সে কথার প্রমাণ দিয়েছে।

ডা. এনায়েতুল্লাহ লেখেন, দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় এই যে-আন্তর্জাতিক হাফেজে কোরআন যখন দেশে ফিরে আসে তখন তাদের জন্য সংবর্ধনার কোনো ব্যবস্থা থাকে না। জাতি হিসেবে এটা আমাদের চরম ব্যর্থতা ছাড়া আর কি হতে পারে?

মিশরের মতো একটি সেক্যুলার রাষ্ট্রেও আন্তর্জাতিক ক্বারী ও হাফেজে কোরআনদেরকে রাষ্ট্রীয় পদক ও ক্রেস্ট তুলে দেন সে দেশের রাষ্ট্রপ্রধানগণ। পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ব্রুনাই ও থাইল্যান্ডে ক্বারী ও হাফেজদেরকে কি সম্মান ও সংবর্ধনা দেওয়া হয় তা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। আর তুরস্কের বিষয় তো আরো ভিন্ন। সে সব রাষ্ট্রগুলোতে প্রচুর সেক্যুলার বুদ্ধিজীবী আছে যারা নিজ মতাদর্শে বিশ্বাসী হলেও ইসলামি তাহযিব-তামাদ্দুন ও আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

ব্যতিক্রম শুধু উপমহাদেশের কাফের মুশরেক নাসতিক অবিশ্বাসীরাই। ইসলাম, মুসলমান, আলেম উলামা ও পীর মাশায়েখদের বিরোধীতা ও তাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণটাই যেন তাদের নেশা ও পেশা।

সূত্র :ইনকিলাব

- Advertisment -

সর্বশেষ সংবাদ