কয়রা(খুলনা)প্রতিনিধি :
খুলনার কয়রায় নানা আয়োজনে মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সূর্যোদয়ের সাথে সাথে তোপধ্বনির মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হয়। সকাল সাড়ে ৬ টায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এসময় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কয়রা উপজেলা কমান্ড,
উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর,বিভিন্ন রাজনৈতিক দল,প্রেসক্লাব, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,কয়রা ব্লাড ব্যাংক,কয়রা ফুড ব্যাংক ও বিভিন্ন এনজিও’র পক্ষেও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। তবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) কয়রা উপজেলা শাখার পক্ষে দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে দেখা গেছে।শ্রদ্ধা নিবেদন করতে দেখা যায়নি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের কয়রা উপজেলা শাখা।তবে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে জাতীয় পাতাকা উত্তোলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে জামায়াতের কয়রা উপজেলা শাখার আমির সহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। লোখ চক্ষুর আড়ালে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কয়রা উপজেলা শাখা।
সকাল ৮ টায় উপজেলা পরিষদের মাঠে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্য ক্রীড়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ক্রীড়া অনুষ্ঠান শেষে সকাল ১১ টায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কয়রা উপজেলা বিএনপির পাল্টাপাল্টি শ্রদ্ধা নিবদনের বিষয়ে খুলনা জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক এ্যাডভোকেট মোমরেজুল ইসলাম বলেন,বিএনপি একটি বৃহৎ দল।এখানে বিভক্তির কোনো সুযোগ নেই।বিজয় দিবসে কয়রা বিএনপির পাল্টাপাল্টি শ্রদ্ধা নিবেদন আমার জানা নেই।তবে জাতীয় প্রোগ্রামে এরকম ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই দলীয় ভাবে আলোচনা করে ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে।
শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা না জানোয়ার বিষয়ে জামাতের আমির মাওলানা মিজানুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি খুলনায় ছিলাম। সকাল ৮ টায় কয়রা এসে পৌঁছেছি। উপজেলা পরিষদের মাঠে আমাদের লোকজন ছিল। তবে শ্রদ্ধা নিবদনের বিষয়ে তার জানা নাই।
গত ৫ আগষ্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর থেকে কয়রা উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ আত্মগোপনে থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।কয়রা উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষে কখন এবং কিভাবে উপজেলা পরিষদের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন তা জানেন না উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাস।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কয়রা উপজেলা কমান্ডের আহবায়ক জি এম মাওলা বক্স বলেন,স্বাধীনতা এমনি এমনি আসেনি।নয় মাস পাক বাহিনীর সাথে সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়েছে।১৯৭১ সালে বাংলাদেশের বিজয় সুনিশ্চিত করতে ৩০ লক্ষ মানুষের শহীদ হতে হয়েছে। ২ লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রম হানি করতে হয়েছে। বিজয় দিবসের প্রোগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের ধারকবাহক দল কয়রা উপজেলা বিএনপির পাল্টাপাল্টি প্রোগ্রাম করা ঠিক হয় নাই। ঐক্যবদ্ধভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করা উচিত ছিল।
জামায়াতের শ্রদ্ধা নিবেদন না করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াত বিরোধিতা করেছিল। সে কারণেই হয়তো তারা শ্রদ্ধা জানাতে যায় নাই। তবে তাদের পূর্ব ভুলের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ।
আওয়ামীলীগের লোখ চক্ষুর আড়ালে শ্রদ্ধা নিবদনের বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলা বক্স বলেন,বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মুক্তিযুদ্ধর চেতনার কথা বলে বাংলাদেশ নিয়ে ১৬ বছর ধরে ব্যবসা করেছে।মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল।বিরোধী রাজনৈতিক মতাদর্শের লোকজনকে ঘুম খুনের শিকার হতে হয়েছে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের হাতে।গত ৫ আগষ্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হওয়ার তারা শেয়ালের গর্তে লুকিয়েছে। শেয়ালের গর্ত থেকে কি আর জন-সম্মুখে শ্রদ্ধা জানানো যায়।