31 C
Dhaka
শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪

স্বাধীনতা অর্জনের পথে ‘মুজিবনগর দিবস’ এক ঐতিহাসিক দিন

আজ ১৭ এপ্রিল। মুজিবনগর দিবস। ঐতিহাসিক এই দিনটি আসলেই বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রটির অভ্যুদয়ের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। স্বাধীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে এবং যৌক্তিক অধিকার রক্ষার মুজিবনগর সরকার অপরিহার্য ছিল সেদিন। এই দিনটির সঙ্গে বাংলা, বাঙালি, মুক্তিযুদ্ধ অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অংশ হয়ে আছে। তাই স্বাধীনতা অর্জনের পথে ১৭ এপ্রিল এক ঐতিহাসিক দিন।

মেহেরপুর জেলার মুজিনগরের বৈদ্যনাথ তলার আম্রকাননে অস্থায়ী সরকার শপথ গ্রহণ করে। দুই শতাব্দির ব্রিটিশ উপনিবেশক পাকিস্তানের শাসন থেকে মুক্ত হওয়ার দূঢ় অঙ্গিকার নিয়ে এই সরকার গঠিত হয়। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম্রকাননে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার স্বাধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছিল। ৪৭ সালের দেশভাগের পরবর্তী সময়ে বাঙালি চেতনা পুণরায় উজ্জীবিত করতে ১৯৭১-এর ২৬ মার্চ আরও একটি যুদ্ধ অবিসম্ভাবী হয়ে পড়ে। একাত্তরের অগ্নিঝরা ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্তভাবে বিজয় অর্জন করে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি (বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি), তাজউদ্দিন আহমেদকে প্রধানমন্ত্রী, ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলীকে অর্থমন্ত্রী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব প্রদান করা হয়। একইসঙ্গে তৎকালীন কর্নেল এম এ জি ওসমানীকে প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত করা হয়। এর আগে ১০ এপ্রিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়।

আজ ১৭ এপ্রিল। মুজিবনগর দিবস। ঐতিহাসিক এই দিনটি আসলেই বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রটির অভ্যুদয়ের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। স্বাধীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে এবং যৌক্তিক অধিকার রক্ষার মুজিবনগর সরকার অপরিহার্য ছিল সেদিন। এই দিনটির সঙ্গে বাংলা, বাঙালি, মুক্তিযুদ্ধ অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অংশ হয়ে আছে। তাই স্বাধীনতা অর্জনের পথে ১৭ এপ্রিল এক ঐতিহাসিক দিন।

মেহেরপুর জেলার মুজিনগরের বৈদ্যনাথ তলার আম্রকাননে অস্থায়ী সরকার শপথ গ্রহণ করে। দুই শতাব্দির ব্রিটিশ উপনিবেশক পাকিস্তানের শাসন থেকে মুক্ত হওয়ার দূঢ় অঙ্গিকার নিয়ে এই সরকার গঠিত হয়। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম্রকাননে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার স্বাধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছিল। ৪৭ সালের দেশভাগের পরবর্তী সময়ে বাঙালি চেতনা পুণরায় উজ্জীবিত করতে ১৯৭১-এর ২৬ মার্চ আরও একটি যুদ্ধ অবিসম্ভাবী হয়ে পড়ে। একাত্তরের অগ্নিঝরা ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্তভাবে বিজয় অর্জন করে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি (বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি), তাজউদ্দিন আহমেদকে প্রধানমন্ত্রী, ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলীকে অর্থমন্ত্রী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব প্রদান করা হয়। একইসঙ্গে তৎকালীন কর্নেল এম এ জি ওসমানীকে প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত করা হয়। এর আগে ১০ এপ্রিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়।

বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। পবিত্র কোরআন তেলওয়াতের পর বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং নবগঠিত সরকারকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করা হয় এবং মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ ও প্রধান সেনাপতি কর্নেল এম. এ. জি ওসমানী (পরবর্তীতে জেনারেল) বক্তব্য দেন। এমনিভাবেই মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য জনগণ নির্বাচিত সংসদের নেতৃত্বে একটি সাংবিধানিক সরকার বিশ্বে আত্মপ্রকাশ হয়েছিল সেদিন।

মুজিবনগর সরকার গঠনের প্রাক্কালে যে ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়েছিল, তার ষষ্ঠ অনুচ্ছেদে লেখা ছিল, ‘বাংলাদেশের সাড়ে ৭ কোটি জনগণের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার অর্জনের আইনানুগ অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ ঢাকায় যথাযথভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং বাংলাদেশের অখণ্ডতা ও মর্যাদা রক্ষার জন্য বাংলার জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।’

ঘোষণাপত্রের নবম অনুচ্ছেদে লেখা ছিল, ‘যেহেতু বাংলাদেশের জনগণ তাদের বীরত্ব, সাহসিকতা ও বিপ্লবী কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের ওপর তাদের কার্যকরী কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করিয়াছে, সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকার বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতি যে ম্যান্ডেট দিয়েছেন সেই ম্যান্ডেট মোতাবেক আমরা নির্বাচিত প্রতিনিধিরা আমাদের সমবায়ে গণপরিষদ গঠন করে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা আমাদের পবিত্র কর্তব্য সেহেতু আমরা বাংলাদেশকে রূপায়িত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি

পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দী জাতির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক করে এদিন গঠিত হয় সার্বভৌম বাংলাদেশ সরকার। বিশ্ব মানচিত্রে স্থান পায় বাংলাদেশের নাম। পরবর্তীতে ঐতিহাসিক এ দিবসটি মুজিবনগর দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এ কারণে মুজিবনগর ও ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশের ইতিহাসে শুধু নয়, বাঙালি জাতির মুক্তির ইতিহাসে আলাদা বিশেষত্ব রাখে। কারণ এখানে ঘোষিত হয়েছিল একটি জাতির মুক্তির জন্য স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র। বঙ্গবন্ধুকে প্রথম রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে ১৭ এপ্রিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আনুষ্ঠানিক এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি শুধুমাত্র সারা বিশ্বেই ঐতিহাসিকভাবে সত্য নয়, পবিত্র সংবিধান এবং সর্বোচ্চ আদালতের রায়েও বিষয়টিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। মুজিবনগর সরকারের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা ও বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ঘটনা সারাবিশ্বেই ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে। বাংলাদেশ যতদিন থাকবে ততদিন কেউ তা মুছে ফেলা যাবে না। ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের শিক্ষা ও চেতনা, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বাঙালী জাতিকে অনুপ্রেরণা ও শক্তি যোগাবে। জাতির পিতার চিন্তা ও আদর্শকে ধারণ করতে শেখাবে।

নাহিদ হাসান শাহীন: মানব সম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ

- Advertisment -

সর্বশেষ সংবাদ