ফারুক হোসেন শেরপুর প্রতিনিধ: দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচরিতা ও ক্ষমতার অপপ্রয়োগসহ নানা অভিযোগে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানাকে বয়কট করেছে স্থানীয় প্রেসক্লাবের গণমাধ্যমকর্মীরা। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মনির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।এছাড়াও বিজয় দিবসের কর্মসূচীতে বিএনপি ও জামায়াতসহ বিভিন্ন সংগঠনকে আমন্ত্রণ না করায় ওইসব সংগঠনের পক্ষ থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে ইউএনও মাসুদ রানাকে পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দোসর বলে আখ্যা দিয়েছেন। সদ্য বদলির আদেশপ্রাপ্ত ইউএনও মাসুদ রানা নালিতাবাড়ী ত্যাগ না করা পর্যন্ত তার সবধরণের কর্মসূচী বর্জন ও সবধরণের খবর কাভারেজ বর্জনের ডাক দিয়েছেন সাংবাদিকরা।
নেত্রকোনা জেলার বাসিন্দা কৃষক পরিবারে সন্তান মাসুদ রানা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ৩৫তম বিসিএস-এ সুপারিশ প্রাপ্ত হয়ে প্রশাসন ক্যাডারে যোগদান করেন। সবশেষ কর্মস্থল সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সেখানে চরম বিতর্কিত হয়ে গত ৩০ মে নালিতাবাড়ীতে যোগদান করেন। জামালগঞ্জে থাকাবস্থায় তার নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে মানব বন্ধন থেকে ঝাড়ু মিছিল পর্যন্ত হয়েছে। নালিতাবাড়ীতে যোগদান করে তিনি স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিরোধীতা করে নানা কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করেন। আওয়ামী লীগের পতনের পরপরই তিনি খোলস পাল্টে নিজেকে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফজ্জামান বাবর এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচয় দেন। এরপর থেকে নানা খাতে সীমাহীন দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে বির্তকিত হন। সবশেষ গত ২ ডিসেম্বর তার দুনীতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন চলাকালে ওই সংবাদ সম্মেলনস্থলে পুলিশ নিয়ে হাজির হয়ে আয়োজকদের আটক করতে উদ্যত হন এবং আয়োজকদের ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর’ বলে আখ্যায়িত করেন। এসময় সাংবাদিকদের তোপের মুখে তিনি ফিরে আসতে বাধ্য হন। ৫ ডিসেম্বর তাকে নালিতাবাড়ী থেকে জামালপুরের বকশিগঞ্জে বদলির আদেশ দেওয়া হয়।শহর জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল মোমেন জানান, জামায়াতে ইসলামীকে বিজয় দিবসের আমন্ত্রন জানানো হয়নি। পরবর্তীতে চাপের মুখে অনুরোধ করে আমন্ত্রপত্র দিলেও আমরা অংশগ্রহণ করছি না।
উপজেলা বিএনপি’র কাউন্সিল উপলক্ষে বিলুপ্ত কমিটির সাবেক আহবায়ক অধ্যক্ষ নুরুল আমীন জানান, বিএনপিকে বিজয় দিবসের কর্মসূচীতে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এসময় তিনি ইউএনওকে আওয়ামী লীগের দোসর বলেও অভিহিত করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজনৈতিক সংগঠনসমূহকে আমন্ত্রণ না জানানোর বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান, সিএকে বলার পরও ভুলবশত আমন্ত্রণ দেওয়া হয়নি।