31 C
Dhaka
শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪

মহিপুরে শীতের আগমনে লেপ-তোশক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

মুন্সী ইউসুফ, কলাপাড়া প্রতিনিধিঃ শীতের আগমনে পটুয়াখালীর মহিপুরে রাতে ও ভোরবেলায় ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে। বাড়ছে লেপ, তোশক ও জাযিমের চাহিদা। এসব সামগ্রী তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। শীত নিবারণের আগাম প্রস্ততি নিতে লেপ-তোশকের দোকানগুলোতে ভিড় করছে ক্রেতারা। কেউ নগদ টাকায় কিনে নিচ্ছেন, কেউ বানানোর জন্য অর্ডার দিচ্ছেন। অনেকে আবার পুরোনো লেপ-তোশক মেরামত করাচ্ছেন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মহিপুর-আলীপুর বাজারের লেপ-তোশকের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় জমেছে। দোকানিরা ক্রেতাদের বিভিন্ন মানের কাপড় ও তুলা দেখাচ্ছেন, নিচ্ছেন অর্ডার। কারিগররা তাদের নিপুণ হাতে সুঁই সুতো নিয়ে করছেন কাজ, তৈরি করছেন বিভিন্ন সাইজের লেপ-তোশক-জাযিম। এ বাজারে লেপ-তোশক তৈরির ১০ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মযজ্ঞ চলছে সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। এ বছর বাজারে প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লেপ-তোশক তৈরির উপকরণের খরচও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।



ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবার প্রতি গজ লেপ তৈরির কাপড়ের দাম ৪৫-৫০ টাকা, তোশকের প্রতি গজ কাপড়ের দাম ৪৬-৪৮ টাকা এবং প্রতি গজ জাযিম তৈরির কাপড়ের দাম রাখা হচ্ছে ১৫০-১৮০ টাকা করে। এছাড়া প্রতি কেজি কার্পাস তুলার দাম ১৮০-২০০ টাকা, পোলি তুলার দাম ১২০-১৩০ টাকা, উলের দাম ৫৫-৬০ টাকা ও প্রতি কেজি জুটের দাম রাখা হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা করে। এ বছর এক পিস রেডিমেট লেপ বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ২৭০০ টাকার মধ্যে, তোশক বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে এবং জাযিম বিক্রি হচ্ছে ৩৫০০ টাকা থেকে ৪২০০ টাকার মধ্যে। এছাড়া বালিশ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে।

সুমনা বেডিং স্টোরের কারিগর জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘আমি প্রায় ২০ বছর থেকে মহিপুরে লেপ-তোশক তৈরির কাজ করি। আমরা ২ জন মিলে প্রতিদিন গড়ে ১০ টি লেপ-তোশক তৈরির অর্ডার শেষ করতে পারি।’

কারিগর সাকিব বলেন, ‘আমি ১০ বছর থেকে এ কাজ করে আসছি। প্রতিবছরের মতো এবারও শীতের আগে আমাদের ব্যস্ততা বেড়েছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের লেপ-তোশক তৈরির কাজ চলে।’

কারিগররা আরও জানান, একটি লেপ তৈরি করলে আকারভেদে ১২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা এবং তোশক তৈরি করতে পারলে প্রতিজন ১৫০-৩০০ টাকা মজুরী পান।

ক্রেতা আব্দুর রহিম বলেন, ‘এবারে বেশি শীত হতে পারে। তাই আগে ভাগে লেপ তৈরির জন্য দোকানে এসে অর্ডার দিচ্ছি। আমরা গরিব মানুষ। কম্বলের যে দাম সেটা কেনার সামর্থ্য নাই। এ কারণে অল্প টাকা দিয়ে লেপ বানিয়ে নিচ্ছি।’

আরেক ক্রেতা মো. ইউসুফ বলেন, ‘দিনের বেলায় শীত অনুভূত না হলেও রাতে শীতের তীব্রতা বাড়ে। কাঁথা দিয়ে শীত নিবারণ হয় না। এজন্য পরিবারের সদস্যদের জন্য ২ টি লেপ বানিয়ে নিচ্ছি। এতে মোট খরচ পড়েছে ৫ হাজার ২০০ টাকা।’

এ ব্যাপারে মহিপুর বাজারের ব্যবসায়ী বেল্লাল বেডিং স্টোরের মালিক মো. বেল্লাল তালুকদারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজের চাপ বাড়ছে। আমাদের দোকানে নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত বেশ কাজের চাপ থাকে। এ সময়টায় ক্রেতারা লেপ-তোশকের অর্ডার দেন, আর আমরা যত্ন সহকারে তা সরবরাহ করে থাকি।’

- Advertisment -

সর্বশেষ সংবাদ