31 C
Dhaka
শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদ করায় কারাবরণ করতে হয় যুবলীগ নেতা মিঠুকে

স্টাফ রিপোর্টার
২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট ঢাকায় আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হয়। গ্রেনেড হামলায় আহত হন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ প্রায় ৩ শতাধিক নেতা-কর্মী। হামলায় ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেড এসেছিল পাকিস্তান থেকে। ঢাকায় আওয়ামী লীগের জনসভায় ও দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার উপর গ্রেনেড হামলার খবরে জামালপুর শহরে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। প্রতিবাদ মিছিল করায় বিএনপি নেতার দায়ের করা মিথ্যা মামলায় কারাবরণ করতে হয়েছিল যুবলীগ নেতা সুশান্ত চক্রবর্তী মিঠুসহ কয়েকজনকে। জেল জুলুম হুলিয়া কোন কিছুই দাবিয়ে রাখতে পারেনি বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান মিঠুকে।
জানা গেছে, ২০০৪ সালে সারাদেশে জঙ্গিদের বোমা হামলা এবং গোপালগঞ্জে পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে ২১ আগস্ট বিকেলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে প্রধান অতিথি শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানস্থলে বিকেল পাঁচটায় পৌঁছালে, একটি ট্রাকের ওপর তৈরি মঞ্চে তিনি ২০ মিনিটের বক্তৃতা শেষে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করার ঘোষণা দেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা মঞ্চ থেকে নিচে নেমে আসতে থাকেন। ঠিক এমন সময় শুরু হয় মঞ্চ লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা। মাত্র দেড় মিনিটের মধ্যে বিস্ফোরিত হয় ১১টি শক্তিশালী গ্রেনেড। এতে ঘটনাস্থলেই ১২ জন এবং পরে হাসপাতালে আরও ১২ জন নিহত হন।
এ ঘটনায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক জিয়া, চারদলীয় জোট সরকারের সাবেক উপমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম পিন্টু, হরকাতুল জিহাদ প্রধান মুফতি হান্নান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ৫২ জনকে আসামি করা হয়।
ঢাকায় আওয়ামী লীগের জনসভায় ও দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার উপর গ্রেনেড হামলার খবরে অনেকেই লেপের নিচে ঢোকলেও পুরো জেলায় তুলপাড় করে একটি মাত্র প্রতিবাদ মিছিল। পুলিশ ও বিএনপির নেতা-কর্মীর বাঁধা অতিক্রম করে জামালপুর শহরে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সদস্য নাঈম রহমান এই মিছিলে নেতৃত্ব দেন। তাৎক্ষণিক ওই মিছিলে ছিলেন জেলা যুবলীগের তৎকালীন নেতা অনিক চৌধুরী টুটন, ৫নং ওয়ার্ড যুবলীগের তৎকালীন সভাপতি সুশান্ত চক্রবর্তী মিঠুসহ ১৫/২০জন যুবলীগ ছাত্রলীগ কর্মী। শহরের দয়াময়ী চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে স্টেশন রোডে লম্বাগাছ এলাকায় পৌছলে পুলিশ ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা ধাওয়া করে। শেখ হাসিনার উপর গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদ করায় তৎকালীন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য এন এন তাপস পাঠান বাদী হয়ে মিথ্যা মামলা দেন অনিক চৌধুরী টুটন ও সুশান্ত চক্রবর্তী মিঠুসহ ৮ জনের নামে। বিএনপি নেতা তাপস পাঠানের ওই মামলায় কারাবরণ করেছেন টুটন ও মিঠুসহ দলের ত্যাগী ৬ জন নেতা-কর্মী। জেল জুলুম হুলিয়া কোন কিছুই দাবিয়ে রাখতে পারেনি বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সুশান্ত চক্রবর্তী মিঠুকে।
মুজিব নগরের কর্মচারী বীর মুক্তিযোদ্ধা নির্মল চক্রবর্তী বাচ্চুর পুত্র যুবলীগ নেতা সুশান্ত চক্রবর্তী মিঠু জানান, আওয়ামী লীগের জনসভা ও দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার উপর গ্রেনেড হামলার খবর শুনার পর নিজেকে কোনভাবেই ঠিক রাখতে পারেনি। নাঈম রহমানের নেতৃত্বে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করেছি। কিন্তু বিএনপি নেতা তাপস পাঠান মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের জেল খাটিয়েছে। তিনি বলেন, এখনো পিছু ছাড়েনি বিএনপি-জামায়াত জোট চক্র। সুযোগ পেলেই বিপদে ফেলার পায়তারা করে চক্রটি। তিনি বলেন, মামলা-হামলা করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার সুযোগ্য কন্যা দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার সৈনিকদের দাবিয়ে রাখা যাবে না। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতের আত্মার মাগফেরাত কামনায় সুশান্ত চক্রবর্তী মিঠু ব্যক্তি উদ্যোগে একাধিক মসজিদে মিলাদ, দোয়া ও একাধিক মন্দিরে বিশেষ প্রার্থণার আয়োজন করেছেন। আয়োজন করা হয়েছে দরিদ্র মানুষের মাঝে উন্নতমানের খাদ্য বিতরণ করার কর্মসূচির।

জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুব বিষয়ক সম্পাদক নাঈম রহমান জানান, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে মিছিল করায় অনিক চৌধুরী টুটন ও সুশান্ত চক্রবর্তী মিঠুসহ ৮ জনের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করেছে বিএনপি নেতা তাপস পাঠান। আওয়ামী লীগের অনেক নেতার ছত্রছায়ায় তাপস পাঠান এখনো বহাল তবিয়তে আছেন।
দলের দু:সময়ের ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতা-কর্মীদের সঠিক মূল্যায়ন করতে নীতি নির্ধারকরা ভুল করবেন না বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা।

- Advertisment -

সর্বশেষ সংবাদ